শ্রীমঙ্গলের হাজীপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ— আহত ৪০, বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ১০
প্রকাশিত হয়েছে : ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, ৬:১৮ পূর্বাহ্ণ
শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি ::
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার বরুনা গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। ঘরবাড়ি ভাঙচুর হয়েছে ১০ টি। গুরুতর আহত দুই ব্যক্তিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো ও বাকিদের মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে গতকাল শনিবার বিকাল ৫ টার কিছু পূর্বে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ থামে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার পর। পুলিশ জানিয়েছে এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পূর্ব শত্ত্রুতার জের ধরে গতকাল বিকালে সংঘর্ষ বাঁধে হাজীপুর গ্রামের ফজর আলী মেম্বার ও মনির মিয়ার পক্ষের লোকজনের মধ্যে।
মনির মিয়ার পক্ষের অভিযোগ হাইল হাওরের ফিসারী ভাঙা ও মামলা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কয়দিন ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। শুক্রবার পুলিশ একটি মামলার আসামী হিসাবে ফজর আলী মেম্বারকে ধরতে এসে তাকে না পেয়ে তার ভাই মজর আলীকে ধরে নিয়ে যায়। এই ঘটনার রেশ ধরে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সাথে সাথে ফজর আলী মেম্বারের লোকজন মনির মিয়া পক্ষের আনোয়ার হোসেনের ছেলে আলীর উপর হামলা করে গুরুতর আহত করে। সে বর্তমানে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এই ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা হলে ক্ষিপ্ত হয়ে মেম্বারের লোকজন প্রতিপক্ষের উপর সংঘবদ্ধ হয়ে গতকাল বিকাল ৫ টার দিকে দেশিয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এই সময় মনির মিয়ার পক্ষের লোকজন বাড়িতে আশ্রয় নিলে সেখানেও তারা হামলা করে এবং ২ টি পাকা বাড়িসহ অন্তত ১০ বাড়ি ঘর ভাঙচুর করে। এই সময় নারীসহ আহত হয় অন্তত ৩০ জন।
আহতদের অধিকাংশই মনির মিয়ার পক্ষের লোক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। আহত দুলাল মিয়া (২৭) ও ময়না মিয়া (৬২) কে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া আহতদের মধ্যে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন- সায়মা বেগম (১৮), লতু মিয়া (৫০), সজিব (১৫), সজ্জাদ (৩০), জমির (৪৫), আফাই (২৮), জাবের (২৫), ময়না মিয়া (৬০), শামছুল মিয়া (৪৫), ফারুক মিয়া (৩২) নজমুল ইসলাম (২৮), জাকির হোসেন (৪৫), কনু মিয়া (৪০), সানু মিয়া (৪২) প্রমুখ।
দুপক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, হাইল হাওরের খাস জমি ও ফিসারী সংক্রান্ত বিষয়ে এলাকার দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে গতকাল ৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে শান্ত থাকতে বলেন এবং আগামী বৃহস্পতিবারে উভয় পক্ষকে নিয়ে নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে সভা হবে বলে কথা হয়। কিন্তু এই কথা বলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিল গতকাল সন্ধ্যা রাতে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান পরিস্থিতি এখন শান্ত। এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।