র্যাফেল ড্র’র নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এক চক্র
প্রকাশিত হয়েছে : ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, ৫:২৫ পূর্বাহ্ণ
মৌলভীবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় শ্রমিক, দিন মজুর ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অবৈধ র্যাফেল ড্র’র নামে ২০ টাকার টিকিট বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি প্রতারক চক্র। স্থায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ এর প্রভাব পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উপরও। বৃদ্ধি পাচ্ছে অপরাধ প্রবণতা।
জয়নাল আবেদীন ::
মৌলভীবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় শ্রমিক, দিন মজুর ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অবৈধ র্যাফেল ড্র’র নামে ২০ টাকার টিকিট বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি প্রতারক চক্র। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গড়ে ১০ লক্ষ টাকা হারে পুরো জেলা থেকে প্রতিদিন অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে লটারির আয়োজকরা। স্থায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রভাব পড়ছে এবং অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত এক মাস যাবত থেকে মৌলভীবাজার জেলা সদর, রাজনগর উত্তর মুন্সীবাজারের করিমপুর, মনুমুখ ও শ্রীমঙ্গলে চলছে যাত্রাপালার আড়ালে অবৈধ জুয়া, বাম্পার, অশ্লীল নৃত্য ও র্যাফেল ড্র’র নামে লটারির জমজমাট ব্যবসা। স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের নামে এসবের আয়োজন হলেও মূলত মৌলভীবাজারের যাত্রার আয়োজকরিই এসব পরিচালনা করছেন।
সকাল থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত অসংখ্য সিএনজি অটোরিক্সা ও প্রাইভেট কারে স্বপ্নতরী প্রতিদিন, রুপসী বাংলাসহ নানা ব্যানারে ২০ টাকা মূল্যের লটারি বিক্রি হয়। রাত ১১টায় লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়, স্থানীয় ক্যাবলের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করে টিকেট ক্রয়কারীদের বিশ্বাস অর্জন করা হয়।
২০ টাকা টিকেট কিনলে একটি ১০০ সিসি ওয়াল্টন মোটরসাইকেল, ফ্রিজ, টিভি, বাইসাইকেল, ফ্যানসহ বিভিন্ন পুরস্কার পাওয়ার লোভে রিক্সা চালক, শ্রমিক, দিনমজুর, ছাত্র ও ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা জনপ্রতি ১০ থেকে ২০টি করে টিকেট ক্রয় করছেন। এভাবে প্রতিদিন জেলার সাতটি উপজেলা থেকে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আর পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা মূল্যমানের।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ভানুগাছ বাজার পৌর বণিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশীদ, শমশেরনগর বণিক কল্যাণ সমিতির সাধারন সম্পাদক আব্দুল হান্নান বলেন, এ অবৈধ ব্যবসার লোভে পড়ে মানুষ কষ্টার্জিত টাকা ঢেলে দিচ্ছে। এতে নিজের ও এলাকার ব্যবসার ক্ষতি সাধন করছে। এ ব্যবসা অবিলম্বে বন্ধ করতে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।
সুজা মেমোরিয়াল কলেজ অধ্যক্ষ ম. মুর্শেদুর রহমান বলেন, জুয়া, হাউজি বাম্পার, অশ্লীল নৃত্য ও অবৈধ লটারি সামাজিক অবক্ষয়ের একটি অংশ। আর এর প্রভাব পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উপরও। তাই অবিলম্বে তা বন্ধ করা উচিত।
টিকেট বিক্রিকারীদের কাছ থেকে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, মালিকের পক্ষে তারা টিকেট বিক্রি করছেন। এ বিক্রির কোন অনুমোদন আছে কিনা তা তাদের মালিক বলতে পারবেন।
প্রকাশ্যে অবৈধ লটারির টিকেট বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া সম্পর্কে জানতে চেয়ে মৌলভীবাজারের এএসপি (সার্কেল) মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে তিনি খোঁজ নিয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিবেন।