হরতাল-অবরোধে পর্যটকশূন্য কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ জানুয়ারি ২০১৫, ৪:৩৪ পূর্বাহ্ণ
ভরা শীত মওসুমে পর্যটকশূন্য পর্যটন নগরী খ্যাত মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল। অনেক ব্যক্তি মালিকানাধীন হোটেলে কর্মচারীদের ঠিকমতো বেতন দিতে না পারায় কর্মচারী ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছেন মালিকরা। টানা অবরোধ-হরতালের কারণে ধ্বস নেমেছে পর্যটনশিল্পে। রোজ ক্ষতি হচ্ছে কয়েক কোটি টাকারও বেশি।
জয়নাল আবেদীন ::
ভরা শীত মওসুমে পর্যটকশূন্য পর্যটন নগরী খ্যাত কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল। দেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট আর টানা অবরোধ-হরতালের কারণে কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলে পর্যটন শিল্পে ধ্বস নেমেছে। শ্রীমঙ্গলের পাঁচতারকা মানের হোটেল, টি রিসোর্ট, ইউএসএইডের ইকো কটেজ, ব্যক্তি মালিকানাধীন হোটেল ও মোটেল এখন ফাঁকা রয়েছে।
প্রতি বছর শীত মওসুম শুরু হতে না হতেই অবকাশ কাটাতে প্রতিদিন অগণিত পর্যটকের আগমন ঘটতো নৈসর্গিক কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল পর্যটন নগরীর আকর্ষণীয় এ পাহাড়ি জনপদে। পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠতো কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া ও পাহাড়িকন্যা শ্রীমঙ্গল। পর্যটকদের সরব উপস্থিতি যেন উৎসবের নগরীতে পরিণত হতো পাহাড়ি এ অঞ্চল। একইসঙ্গে নান্দনিক সৌন্দর্যমণ্ডিত এ দুই উপজেলার পাহাড়ি এলাকার দর্শনীয় স্থান ও নিদর্শনগুলো পর্যটকদের আকর্ষণ করে সহজেই। অসংখ্য নৈসর্গিক দর্শনীয় স্থা দেখতে শীতকালে ভ্রমণবিলাসী পর্যটকদের পদভারে মুখরিত থাকতো। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতেও ভিড় জমতো আরও বেশি। ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকদের বাস, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কারের ভিড়ে ঠাসা হয়ে থাকতো ছোট্ট ছিমছাম শহর শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ।
কিন্তু এবার শীতে উল্টো চিত্র। বিশ্বের সেরা গল্ফ রিসোর্ট হিসেবে ‘ওয়ার্ল্ড লাক্সারি হোটেল অ্যাওয়ার্ড ২০১৪’ অর্জনকারী গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গল্ফের সহকারী ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) পলাশ চৌধুরী বলেন, শীত মওসুমকে কেন্দ্র করেই পাহাড়ের পর্যটন ব্যবসা রমরমা হয়ে উঠতো। প্রতি বছর অসংখ্য পর্যটক ও ভ্রমণপিপাসু লোকজনের আগমন ঘটে কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলে। দীর্ঘ সময় ধরে চলা অবরোধ-হরতাল ও রাজনৈতিক অস্থিরতা পর্যটকদের জন্য বাধার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শ্রীমঙ্গল ওরিয়েন্ট ট্যুরিজম চ্যানেলের ট্যুর গাইড রিফাত জামান রিজভী জানান, টানা অবরোধ আর হরতালের কারণে এবার শীত মওসুমে কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলে তেমন পর্যটক আসেনি। পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সকলেই আর্থিক ক্ষতি গুনছে।
চা-বোর্ডে পরিচালনাধীন টি-রিসোর্টের ব্যবস্থাপক অরুণ সিংহ জানান, দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তেমন কোন পর্যটকের মুখ দেখতে পায়নি শ্রীমঙ্গলসহ কমলগঞ্জের রেস্ট হাউজ ও হোটেল মালিকরা। আবাসিক হোটেলগুলো পর্যটকশূন্য। কর্মচারীদের ঠিকমতো বেতন দিতে না পারায় ইতিমধ্যে অনেক হোটেলে কর্মচারী ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছেন মালিকরা।