ছাতকের বাগবাড়ি মডেল স্কুলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ জানুয়ারি ২০১৫, ৬:২৬ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
সুনামগঞ্জের ছাতকে বাগবাড়ি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান। বিদ্যালয়টি পৌরসভা কার্যালয় ও উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন প্রধান সড়কের পাশে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হলেও বিদ্যালয়টির দুরাবস্তা সংশ্লিষ্টদের নজরে আসছে না। বিদ্যালয়ের টিনশেড ভবনটির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। টিনের চালা, বাঁশের তৈরি ছাদ ও কাঠ রয়েছে ঝুলন্ত অবস্থায়। যেকোন সময় ধ্বসে পড়ে ঘটতে পাড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা। ভবনের ৬টি কক্ষের ভাঙা-চুরা ও স্যাঁত-স্যাঁতে মেঝেতে নোংরা পরিবেশে চলছে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। কাঠের বর্গা-তীর থেকে টিন আলাদা হয়ে যাওয়ায় প্রতি মুহূর্তেই রয়েছে দুর্ঘটনার আশংকা। টিন শেডের ভবনের দেয়াল ও পিলারে সৃষ্টি হয়েছে বড়-বড় ফাঁটল। ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনটি ঝড়ে ভেঙে পড়ার আশংকা করছেন অভিভাবকরা।
১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যাপীঠ ৯৫বছর ধরে গৌরবের পথচলা অব্যাহত রাখলেও জীর্ণতা তার পিছু ছাড়েনি। প্রতিষ্ঠার পর আরো দু’টি ভবন নির্মিত হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ অবস্থায়ই এ ভবনে চলছে পাঠদান। নতুন-পুরাতন ভবন মিলেই বর্তমানে বিদ্যালয়ে সহস্রধিক শিক্ষর্থীর জায়গা সংকুলান নিয়ে কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের বসার সংকট থাকা অবস্থায় নতুন ভবনের একটি কক্ষ দখল করে রেখেছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। এ কক্ষে উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বই রেখে শিক্ষা অফিস কক্ষটিকে গুদাম হিসেবে ব্যবহার করছে।
অভিভাবক আব্দুল মোমিন, আবুল বশর ও বিকাশ চৌধুরী জানান, বিদ্যালয়টি নামে মডেল হলেও এর পরিবেশ নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর। প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ওয়াশব্লকের সুবিধা থাকলেও বাগবাড়ি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিত্যরঞ্জন দাস জানান, এ বিদ্যালয়ে বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের স্থান সংকুলনের জন্য আরো একটি ভবন নির্মানের প্রয়োজন। সহস্রাধিক শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষক ও ডেস্ক-বেঞ্চের অভাব রয়েছে বিদ্যালয়ে।
এতসব সংকট থাকা সত্ত্বেও ২০১৩ সালের পিএসসিতে বিদ্যালয়ের ১শ৫৩জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে ২৯ টি জিপিএ-৫ সহ শতভাগ ফলাফল অর্জন করে জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠের গৌরব অর্জন করে। ২০১৪সালে ৩১জিপিএ-৫সহ শতভাগ ফলাফলের মাধ্যমে উপজেলার শ্রেষ্ঠ হয় এ বিদ্যাপীঠ।
আধুনিক সুযোগ-সুবিধে থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। আইসিটি প্রদানের সব সুযোগ থাকলেও মাল্টি-মিডিয়া ক্লাসরুমের অভাবে তা চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান চৌধুরী খোকন জানান, গত আট বছর ধরে বিদ্যালয়ে আরো একটি ভবন নির্মাণের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় তা সম্ভব হচ্ছে না।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানিক লাল দাস জানান, শিক্ষা বিভাগের কোন গুদাম না থাকায় অস্থায়ীভাবে সরকারি বই স্বল্প সময়ের জন্য এ বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে রাখা হয়। বর্তমানে থাকা এসব বই দ্রুত সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। তবে শিক্ষার্থী অনুপাতে এখানে আরো একটি ভবনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তিনি স্বীকার করেন।