আন্তর্জাতিক বাজারে কমতে থাকলেও দেশে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ জানুয়ারি ২০১৫, ৪:২৭ পূর্বাহ্ণ
খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ৪ থেকে ৬ টাকা বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কম থাকায় গত মাসে মিলগেটে প্রতি লিটারে ১৪ টাকা দাম কমিয়েছিল মিল মালিকদের সংগঠন। এক মাস পরই আবার দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে এখনও সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ক্রমান্বয়ে কমছে। দেশের বাজারে ঘটল এর উল্টো ঘটনা।
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক ::
ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ৪ থেকে ৬ টাকা বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো। ইতিমধ্যে খুচরা বাজারে বাড়তি এ দামে বিক্রি শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহে বাংলাদেশ অয়েল মিলস অ্যাসোসিয়েশন লিটারে ৪ টাকা দর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, কিছু কোম্পানি এর চেয়েও বেশি দামে বিক্রি করছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিনের দাম কম থাকায় গত মাসে মিলগেটে প্রতি লিটারে ১৪ টাকা দাম কমিয়েছিল মিল মালিকদের সংগঠনটি। অথচ এ দামে পণ্য বিক্রির এক মাস পরই আবার দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে এখনও সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ক্রমান্বয়ে কমছে। এরই মধ্যে দেশের বাজারে ঘটল উল্টো ঘটনা।
তবে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার তথ্যের উল্টো দাবি মিল মালিক সংগঠনের নেতাদের। তারা দাবি করেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়তি। একই সঙ্গে আমদানি খরচ আগের চেয়ে বেশি পড়ছে। পাশাপাশি হরতাল-অবরোধের কারণে পরিবহন ব্যয় কয়েক গুণ বেশি হওয়ায় দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানুয়ারিতে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের কমোডিটি মার্কেট আউটলুকেও ভোজ্যতেলের দাম কমেছে বলে উল্লেখ করা হয়। আন্তর্জাতিক বাজার বিষয়ক ওয়েবসাইট ইনডেক্স মুন্ডির তথ্য অনুযায়ী, এক বছরের মধ্যে গত মার্চে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকলেও এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। মার্চে প্রতি টন সয়াবিন ছিল ৯২৮ ডলার (প্রতি লিটার ৭২ টাকা)। পর্যায়ক্রমে তা কমে গত ডিসেম্বরে লেনদেন হয়েছে ৭০৫ ডলারে (প্রতি লিটার ৫৫ টাকা)। একই সময়ের ব্যবধানে পাম তেলের দামও প্রতি টনে ২৩৬ ডলার (প্রতি লিটার ১৮ টাকা) কমেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম। প্রতি লিটার ৬ টাকা বেড়ে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মেঘনা গ্রুপের ফ্রেশ ব্র্যান্ড লিটারে ৬ টাকা বেড়ে গত দুই দিন ১০৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
গতকাল থেকে এ কোম্পানি সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ টাকাই বাড়াবে বলে দোকানিদের জানিয়েছে। সিটি গ্রুপের তীর ব্র্যান্ডের তেল ৪ টাকা বেড়ে ১০৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা তেলের দামও একই হারে বেড়ে প্রতি লিটার সয়াবিন ১০২ থেকে ১০৪, পাম ৬৫ থেকে ৬৮ ও সুপার পাম ৭০ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, গত এক মাস কম দামে তেল বিক্রি করেছেন। এখন হঠাৎ দাম বাড়ানোয় বিক্রি করতে অনেক ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে তাদের।
পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা জানান, চাহিদার তুলনায় বাজারে তেলের সরবরাহ কম। সরবরাহ আদেশ অনুযায়ী কোম্পানিগুলোর মিলগেট থেকে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। এখন প্রতি মণ সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৭০০ টাকা। পাম তেলের দামও মণে ২০০ টাকা বেড়েছে।
সিটি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা জানান, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে প্রতি টন ৭০ থেকে ৮০ ডলার বাড়তি দামে কিনতে হয়েছে। একই সময়ে অবরোধের কারণে চার গুণ পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। তাছাড়া আগামী মাস থেকে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কথা রয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সমিতি ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি।