যাত্রাবাড়ীতে বাসে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলা, দগ্ধ ২৮
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ জানুয়ারি ২০১৫, ৫:১৭ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় গতকাল ২৩ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে দুই নারীসহ ২৮ যাত্রী দগ্ধ হয়েছেন। হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন আরও একজন। দগ্ধদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
ঘটনার পর দগ্ধ ব্যক্তিদের একে একে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে কারও পুড়ে গেছে মুখ, কারও হাত, কারও পা। কারও নাক-মুখ থেঁতলে গড়িয়ে পড়ছে রক্ত। তীব্র যন্ত্রণা আর ব্যথায় ছটফট করছিলেন অনেকেই। খবর পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে ছুটে আসেন স্বজনেরা। কারও কারও কণ্ঠে তখন তীব্র ক্ষোভ।
দগ্ধ যাত্রী ও যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ জানায়, রাত পৌনে ১০টার দিকে গুলিস্তান থেকে যাত্রীবাহী গ্লোরি পরিবহনের একটি বাস নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে যাচ্ছিল। বাসটি ডেমরা রোডের কাঠেরপুল এলাকায় পৌঁছালে কে বা কারা বাসের বাঁ পাশে পেট্রলবোমা ছুড়ে মারে। এতে বিকট শব্দ হয়ে পুরো বাসেই আগুন ধরে যায়। এতে দগ্ধ হন ২৮ জন। নামতে গিয়ে আহত হন আরও একজন। অন্য যাত্রীরা দরজা ও জানালা দিয়ে কোনো রকমে নেমে প্রাণে রক্ষা পান।
আহত ব্যক্তিরা হলেন শরীফ খান, তকবীর ইসলাম, সালাউদ্দিন পলাশ, সালমান, মোশারফ হোসেন, মোশারফের ভাতিজা সালাউদ্দিন, জয়নাল আবেদীন, খোকন, ইসতিয়াক আহমেদ, নাজমুল হোসেন, ইয়াসির আরাফাত, ইয়াসিরের স্ত্রী শাহীদা ফাতেমা, রাশেদুল ইসলাম, নূর আলম, ওসমান গনি, মো. সুমন, ফারুক হোসেন, মো. রুবেল, মোমেন, রফিকুল ইসলাম, তানভীর, আরিস মিয়া, মো. জাবেদ, আবু মিয়া, শহীদুল ইসলাম, মোজাফফর মোল্লা, শাহজাহান, আবুল হোসেন ও আফরোজা বেগম। এঁদের মধ্যে আফরোজা ছাড়া বাকি সবাই দগ্ধ। দগ্ধদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
বার্ন ইউনিটের অধ্যাপক সাজ্জাদ খন্দকার জানান, ২৯ জনের মধ্যে নয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের প্রত্যেকের শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। বাকি ২০ জনের সর্বনিম্ন ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ ভাগ পুড়ে গেছে।
রাত ১০টার দিকে বার্ন ইউনিটে গিয়ে দেখা যায়, দগ্ধদের ধরাধরি করে আনা হচ্ছে। চারদিকে চিৎকার, আর্তনাদ, আহাজারি। গণমাধ্যমের কর্মী ছাড়াও স্বজনদের ভিড়। খবর পেয়ে ছুটে এসেছেন বার্ন ইউনিটের ঊর্ধ্বতন চিকিৎসকেরাসহ অনেকেই। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে একে একে আহত ব্যক্তিদের পাঠানো হচ্ছে পর্যবেক্ষণকক্ষে।
ঘটনার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দীন মোহাম্মদ নূরুল হক বার্ন ইউনিটে যান। তিনি পরে সাংবাদিকদের জানান, এটা বীভৎস ঘটনা। শুধু এদেরকেই পোড়ানো হয়নি, তাদের পরিবারকেও ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।