শমশেরনগরের কানিহাটি চা বাগানে মাদকের অবাধ কেনা-বেচা ও সেবন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ জানুয়ারি ২০১৫, ৪:৩৬ পূর্বাহ্ণ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর-চাতলাপুর শুল্ক অফিস সড়কের কানিহাটি চা বাগানে ভারতীয় মাদকের আস্তানা গড়ে উঠেছে। গত একমাস যাবত কানিহাটি চা বাগানে মাদক সেবনের পর পারিবারিক কলহে ও দাঙ্গা হাঙ্গামা করে তিনজন চা শ্রমিক মারা যান। অবাধে মাদক সেবন ও মাদকাসক্তদের কারণে চা বাগানের যুবসমাজ বিপথগামী হচ্ছে এবং স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও এর খারাপ প্রভাব পড়ছে।
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি ::
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর-চাতলাপুর শুল্ক অফিস সড়কের কানিহাটি চা বাগানে ভারতীয় মাদকের আস্তানা গড়ে উঠেছে। এখানে চা বাগানের দেশিয় চোলাই মদের সাথে ভারতীয় মাদকের হাটে পরিণত হয়েছে। মৌলভীবাজার সদরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা যুবকরা প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাদক কেনা-বেচা ও সেবন করে থাকে। অবাধে মাদক সেবন প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় নেশাগ্রস্ত ও পারিবারিক কলহে জড়িয়ে কানিহাটি চা বাগানের কয়েকজন শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের কৈলাশহর ও উত্তর ত্রিপুরার সাথে যাতায়াতের সড়ক হিসাবে শমশেরনগর-চাতলাপুর সড়কে বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রপ্তানী হচ্ছে। ফলে এই রুট দিয়ে সহজেই ভারতীয় বিভিন্ন ধরনের মাদক বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এই সড়কটি ডানকান ব্রাদার্স শমশেরনগর চা বাগান ও ফাঁড়ি কানিহাটি চা বাগানের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কানিহাটি ও চাতলাপুর চা বাগানের কয়েকটি স্পটে অবাধে মাদক সেবন ও বেচাকেনা চলছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কানিহাটি চা বাগানের বড় লাইনসহ রাস্তার ধারে, খোলা জায়গায় ভারতীয় কোরেক্স, হুইস্কিসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের লেবেল পড়া খালি বোতল পড়ে রয়েছে। কানিহাটি চা বাগানের স্থানীয় দুইজনসহ আশপাশ বস্তির কয়েকজন ব্যবসায়ী অবাধে ভারতীয় মাদকের জমজমাট ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে কার, লাইটেস, অটোরিক্সা, মোটরসাইকেল যোগে যুবকরা এসে গভীর রাত পর্যন্ত মাদক সেবন ও বেচাকেনা চলে।
কানিহাটি বাগানের শ্রমিকরা জানান, গত একমাস যাবত কানিহাটি চা বাগানে মাদক সেবনের পর পারিবারিক কলহে ও দাঙ্গা হাঙ্গামা করে চা শ্রমিক গপি চাঁন মৃধা (৪০), নরেশ রিকিয়াশন (৩০), প্রসাদ রবিদাস (৩৫) মারা যান। এছাড়াও আহত হন জীবন রিকিয়াশন (৩০)।
কানিহাটি চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সম্পাদক বৈকুন্ঠ রবিদাস বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে কানিহাটি বাগানের বড় লাইনে অপরিচিত বহিরাগত লোকেরা গাড়ি নিয়ে এসে গভীর রাত পর্যন্ত ভিড় জমিয়ে মাদক সেবন করেন। শিক্ষক প্রদীপ কুমার পাল বলেন, তাঁর বাসার পার্শ্ববর্তী পরিত্যক্ত জমি থেকে ৭৩টি কোরেক্স ও হুইস্কি মাদকের খালি বোতল ফেলেছেন। স্থানীয় কয়েকজন অভিভাবক বলেন, অবাধে মাদক সেবন ও মাদকাসক্তদের কারণে চা বাগানের যুব সমাজ বিপথগামী হচ্ছে এবং স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও এর প্রভাব পড়ছে।
অভিযোগ বিষয়ে মৌলভীবাজারের এএসপি (সার্কেল) মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।