কমলগঞ্জে নদীর পাড় কেটে চলছে বালু-মাটির বাণিজ্য
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জানুয়ারি ২০১৫, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাঘাটা নদীর আলীনগর এলাকায় নদীর কেটে অবাধে চলছে বালু মাটির বাণিজ্য। নদী তীরবর্তী এলাকার ফসলি জমি ও রাস্তা নদী গর্বে বিলীন এবং নদীর গতিপথ বদলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
জয়নাল আবেদীন ::
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাঘাটা নদীর আলীনগর এলাকায় নদীর পাড় কেটে অবাধে চলছে বালু মাটির বাণিজ্য। এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগের পরও অবৈধভাবে প্রকাশ্যে নদীর বাঁধের মাটি কেটে ও বালু উত্তোলন করে গেলেও এব্যাপারে কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। ফলে নদী তীরবর্তী এলাকার ফসলি জমি ও রাস্তা নদী গর্বে বিলীন এবং নদীর গতিপথ বদলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবরে দেয়া লিখিত অভিযোগে জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে চলা লাঘাটা নদীর আলীনগর আবাসন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় একটি মহল ‘মাটি ও বালি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০’ উপেক্ষা করে নদীর পেট থেকে মাটি কেটে এবং নদী থেকে বালু উত্তোলন করে অন্যত্র বিক্রি করে চলেছে। নির্মিতব্য বাসা, বাড়ি ও রাস্তাঘাটে এসব বালু, মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। স্থানীয় এলাকাবাসীর আপত্তি উপেক্ষা করে তারা নদীর তীর ঘেঁষা পার কেটে দেদারসে বালু মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করছে। ফলে নদী তীরবর্তী এলাকার ফসলি জমি, রাস্তা ভাঙন ও নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। হুমকিতে পড়েছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য।
আব্দুন নূর চৌধুরী, জাফর আলীসহ স্থানীয় লোকজন বলেন, এলাকার কয়েক ব্যক্তি অবৈধভাবে সরকারি খাসভূমির মাটি, লাঘাটা নদীর বাঁধ কেটে নেওয়ায় নদীর গতিপথ বদলে এলাকাবাসী ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এছাড়া কৃষিজমি ও রাস্তাঘাট নদী গর্ভে বিলীন হবে। এসব বিষয়ে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে ১৪ জানুয়ারি মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে আবারও লিখিত গণদরখাস্ত দেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী আরও জানান, লাঘাটা নদীর আলীনগর অংশ ছাড়াও শমশেরনগর, পতনঊষারসহ বিভিন্ন স্থানে নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ক্রসবাঁধ, স্লুইসগেট স্থাপন, সেচ দিয়ে নদী শুকিয়ে মাছ শিকার এসব বিভিন্ন কার্যক্রমে মেরে ফেলা হচ্ছে নদীকে। এই নদীকে কেন্দ্র করে সেচ সুবিধার মাধ্যমে কৃষকরা শত শত হেক্টর ফসলি জমি চাষাবাদ করেন। মৎস্য সম্পদ আহরনেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে নদী। কিন্তু একদিকে পানি আটকিয়ে নদী শুকিয়ে এবং অন্যদিকে অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে বালু-মাটি উত্তোলনের ফলে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে নদী।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।