রাজনগরে চেক হস্তান্তর না করে প্রতিবন্ধীদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জানুয়ারি ২০১৫, ৬:৫৭ পূর্বাহ্ণ
স্বাক্ষর হয়ে গেলেও গত প্রায় ৬ মাস থেকে আটকে রাখা হয়েছে প্রতিবন্ধীদের ভাতার চেক। চেকের টাকা ব্যাংক একাউন্ট থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
আব্দুর রহমান সোহেল ::
স্বাক্ষর হয়ে গেলেও গত প্রায় ৬ মাস থেকে আটকে রাখা হয়েছে প্রতিবন্ধীদের ভাতার চেক। সময়মতো হস্তার না করায় এসব চেকের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে চলতি জুন মাসের ২২ তারিখ। প্রতিবন্ধীদের চেকগুলো বিতরণ না করে উল্টো ১০টি চেকের টাকা ব্যাংক একাউন্ট থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এতে সরকারি অনুদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিবন্ধীরা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সমাজসেবা মন্ত্রণালয় থেকে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় প্রতিবন্ধীদের জন্য এককালীন বরাদ্দ ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা গত জুন মাসে। সে অনুযায়ী উপজেলার ৮ ইউনিয়নের ৪২ জন প্রবিন্ধীদের তালিকা প্রস্তুত করে জনপ্রতি ৩ হাজার টাকা করে বরাদ্দ প্রদানের চেক ইস্যু করা করায়। গত ২৩ জুলাই ইস্যুকৃত চেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বাক্ষর করেন ২৪ জুলাই। কিন্তু এসব চেক প্রতিবন্ধীদের বরাদ্দ না করে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম চেকগুলো নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। একাউন্ট পে চেক হলেও গত ২৭ জুলাই সমাজসেবা কর্মকর্তা অফিসের কর্মচারীর মাধ্যমে ১০ জন প্রবিন্ধীর চেকের টাকা সমাজসেবা অফিসারের সোনালী ব্যংকের ৩৩০০৫৫৪ একাউন্ট থেকে ৭৯৬৬৭০১ থেকে ৭৯৬৬৭১০ নং পর্যন্ত ১০টি চেকের ৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। লুটাই বৈদ্য, বিন্দু রাণী শীল, আহমদ মিয়া, আব্দুস সামাদ, শাকিল আহম্মদ, তাহমিনা আক্তার, মো. বিলাল মিয়া, মো. মিপ্তাউল জান্নাত নাইম, জয়দেব মৃদুল ও গঙ্গামা নাইডু নামে ১০জন প্রতিবন্ধীর জন্য এ ১০টি চেক ইস্যু করা হয়েছিল। চেক ইস্যুর সাড়ে ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এসব চেক প্রতিবন্ধীদের হস্তান্তর না করে উল্টো ১০টি চেকের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। সোনালী ব্যংকের রাজনগর শাখায় খোঁজ নিয়ে এসব চেক উত্তোলনের তথ্য পাওয়া যায়। চলতি মাসের ২২ তারিখের মধ্যে এসব চেক প্রতিবন্ধীদের হস্তান্তর না করলে চেকগুলো বাতিল হয়ে যাবে। এতে প্রতিবন্ধীরা সরকারী অনুদান থেকে বঞ্চিত হয়ে যাওয়ার সংশয় দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চেক উত্তোলনকারী ওই কর্মচারী জানান, চেক উত্তোলনে তিনি শুধু কর্তার নির্দেশ পালন করেছেন। সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম মৌলভীবাজার সদর উপজেলার দায়িত্বে রয়েছেন। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে রাজনগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন করছেন। চেক হস্তান্তর না করা এবং প্রতিবন্ধীদের অনুদাদের টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ সম্পর্কে বলেন, প্রতিবন্ধীদের তালিকা নিয়ে রাজনৈতিক ভিন্নমত রয়েছে। এদেরকে দেওয়ার জন্যই দেরি করছি। যে চেক তুলা হয়েছে এগুলো তালিকার ভিন্ন মানুষদের দেয়া হয়েছে।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোজিবুর রহমান বলেন, এসব বিতরণের জন্য আমি গত রবিবার (১১ জানুয়ারি) তাগিদ দিয়েছি। তবে চেকের টাকা উত্তোলনের বিষয়টি আমার জানা নেই। এই টাকা সে কেন তুলবে। আমি বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।