রাজনগরে কন্যা শিশু হত্যার অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ৫ জানুয়ারি ২০১৫, ১১:২১ পূর্বাহ্ণ
রাজনগর প্রতিনিধি ::
মৌলভীবাজার শহরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে এক কন্যা শিশু জন্ম দেন পিয়ারুন বেগম (৩০) গত ২৮ নভেম্বর। জন্মের ৩৫ দিন চলে গেলেও নাম রাখা হয়নি নবজাতক এ শিশুর। তার আগেই কন্যা শিশু জন্ম দেয়ার অপরাধে শুরু হয় মায়ের উপর নির্যাতন। কন্যা জন্ম দেয়ার অপরাধে গত ৩ জানুয়ারি শনিবার পিয়ারুন বেগমের স্বামী আরশাদ মিয়া শুরু করেন মারধর। কিন্তু আরশাদ মিয়ার একটি আঘতই প্রাণ কেড়ে নিল পিয়ারুন বেগমের কোলে থাকা শিশুটির।
পিয়ারুন বেগম রাজনগর থানায় এমনি একটি অভিযোগ দিলে আজ ৫ জানুয়ারি সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার সময় এফআইআর ভূক্ত হয় মামলাটি। নং-০৬। ঘটনাটি রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের পূর্ব কাছারী গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাছারী গ্রামের আরশাদ মিয়ার স্ত্রী পিয়ারুন বেগম গত ২৮ নভেম্বর মৌলভীবাজার শহরের একটি ক্লিনিকে একটি কন্যা শিশুর জন্ম দেন। কন্যা শিশু জন্ম দেয়ায় আরশাদ আলী তাকে দেখতেও জাননি। সিজার ও আনুষাঙ্গিক খরচ দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে আনতেও অপারগতা প্রকাশ করেন। পিয়ারুন বেগমের মা টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনেন হাসপাতাল থেকে। বাড়িতে আনার পর পিয়ারুন বেগমের উপর শুরু হয় স্বামী আরশাদ মিয়ার নির্যাতন। গত ৩৫ দিনে স্বামী আরশাদ মিয়া বেশ ক’বার অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছেন । গত শনিবার পিয়ারুন বেগমের উপর স্বামী আরশাদ আলী শুরু করেন আবারো নির্যাতন। লাকড়ি দিয়ে বেধরক পিটানোর সময় পিয়ারুন বেগমের কোলে ছিল ওই শিশুটি। আরশাদ মিয়ার একটি আঘাত শিশুটির মাথায় লাগলে সে রক্তাক্ত জখম হয়।
আলাপকালে পিয়ারুন বেগম বলেন, একটি আঘাতেই আমার নাড়ি ছেড়া ধন নিস্তেজ হয়ে পড়ে। স্বামী আরশাদ আলী ও তার আত্মীয়-স্বজন তাকে (শিশুটিকে) হাসপাতালে নিয়া যান। দুপুরে তাকে মৃত নিয়ে আসেন। আমাকে মেয়ের মুখ দেখতে না দিয়েই (ওই দিন) আছরের পরে লাশ দাফন করে ফেলেন। তিনি আরো জানান, খবর পেয়ে আমার মা দেখতে আসায় তার মোবাইল দিয়ে একই গ্রামে তার ভাইদেরকে জানান বিষয়টি। পরে তারা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। এ স্বামীর নির্যাতনে আহত পিয়ারুন বেগম রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।
পরে ওই দিনই এ ঘটনায় পিয়ারুন বেগম রাজনগর থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দেন। গতকাল সোমবার (৫ জানুয়ারী) পুলিশ মামলাটি নথিভূক্ত করে। মামলা নং-০৬।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুদ্দোহা বলেন, মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশ উত্তোলনের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে। এ ব্যপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসামী গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।