ধূলিকণা থেকে অ্যালার্জি আর নয়
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ ডিসেম্বর ২০১৪, ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ
হেলথ ডেস্ক ::
কারো কারো প্রায়ই নাকবন্ধ থাকে বা চোখ চুলকায় কিংবা রয়েছে হাঁপানির সমস্যা। এ সব হওয়ার অনেক কারণের মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ ধূলিকণা থেকে অ্যালার্জি। তবে একটু সচেতনতাই কিন্তু এ কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
চাই পরিষ্কার বিছানা
মাঝে মাঝেই নাক বন্ধ থাকে অথবা ঠান্ডা লাগে। তার ওপর এর জন্য কোনো ওষুধ খেয়েও লাভ হয় না। এমনকি বিছানায় শুয়ে থেকেও ঠিকমতো বিশ্রাম হয় না, বরং উল্টোটাই হয়। কারণ বিছানায় রয়েছে ধুলোবালি, ছারপোকা, যা সাধারণ চোখে সেভাবে দেখা যায় না। তাই যতক্ষণ এগুলো পুরোপুরি পরিষ্কার না হবে, ততক্ষণ অ্যালার্জির কষ্ট থাকবেই।
ধূলিকণার অ্যালার্জি
ধূলিকণার অ্যালার্জি আনুমানিক শতকরা ১০ জন মানুষের রয়েছে ধূলিকণার অ্যালার্জি। এতে করে সবসময় সর্দি ভাব থাকে, চোখ দিয়ে পানি পড়ে। সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার হলো, এটা বেশ নিয়মিতভাবে হয় এবং কখনই একেবারে সেরে যায় না। ঘরের ভেতরে থাকলে এতে বেশি কষ্ট হয়, যা পরে এক সময় হাঁপানিতেও পরিণত হতে পারে।
বাড়ির পর্দা পরিষ্কার রাখুন
ধূলিকণার অ্যালার্জি থেকে দূরে থাকতে নিয়মিত বাড়ির দরজা, জানালার পর্দা ধুতে হবে। সম্ভব হলে পর্দা তৈরির জন্য এমন কাপড় কিনতে হবে, যা সহজে ধোয়া যায়। তাছাড়া পর্দার কাপড় হওয়া চাই সেরকম, যাতে ধুলোবালি আটকে থাকতে না পারে।
কাপড়ের খেলনা
ছোট্ট-মিষ্টি কাপড়ের খেলনাগুলো দেখলেই কেমন যেন আদর করতে ইচ্ছে করে, তাই না? এ সব খেলনা অনেক শিশুই হাতে রাখে বা বিছানায় সাথে নিয়ে ঘুমায়। যত আদরের খেলনাই হোক না কেন, এগুলোতে কিন্তু অনেক ধুলো আটকে থাকে। তাই মাঝে মাঝেই শিশুদের প্রিয় কাপড়ের এই খেলাগুলোকে ‘ডিপফ্রিজে’ কিছুক্ষণের জন্য রেখে দিন, যাতে এতে বসে থাকা ছারপোঁকাগুলো মরে যায়।
সোফার ধুলোবালি
আমরা সবাই জানি যে, চামড়ার সোফা ছাড়া বেশিরভাগ সোফার কাপড়ে ধুলো আটকে থাকে। তাই যাঁদের অ্যালার্জি আছে তারা হয় চামড়ার সোফাসেট ব্যবহার করুন, নয় তো সোফা পরিষ্কার ও সোফার ঢাকনা নিয়মিত পাল্টান।
চাদর বালিশ, লেপ, কম্বল
যাঁদের এ ধরনের অ্যালার্জি আছে, তাঁরা নিয়মিত পর্দা, বিছানা, সোফা – ইত্যাদি পরিষ্কার রাখুন। এগুলোর মধ্যে ধুলোবালি বা ছারপোঁকা থেকে গেলে কিন্তু কোনো লাভ নেই। কারণ ওরা অতি দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। বলা বাহুল্য, ছারপোঁকার সবচেয়ে আরামের জায়গা হচ্ছে তোষক। আর তার ওপরই মানুষ অনেকটা সময় কাটায়। তাই সবচেয়ে ভালো হয় পুরনোগুলো ফেলে দিয়ে, নতুনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে পারলে।
স্বাস্থ্য আগে, সৌন্দর্য নয়!
অনেক মা-বাবাকেই বলতে শোনা যায় যে, তাঁদের বাচ্চাদের কার্পেট থেকে অ্যালার্জি হয়। কিন্তু বিছানার ম্যাট্রেসের কথা অনেকে হয়ত লক্ষ্যই করেন না। যাই হোক, যে বাড়িতে বাচ্চার অ্যালার্জি আছে, সেখানে ছোট কার্পেট রাখা যেতে পারে। তবে খুব ভালো করে নিয়মিত কার্পেটটি শ্যাম্পু করতে হবে। গরমের দেশে বাড়িতে কার্পেট শুধু সৌন্দর্য বাড়ানো ছাড়া আর কোনো কাজে লাগে না। তাই সেটা না রাখাই ভালো।
ডাক্তারি পরীক্ষা
অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞরা বলেন, যাদের সর্দি, নাকবন্ধ, চোখ দিয়ে জল পড়া, হাঁপানি, শুকনো কাশি নিয়মিতভাবে হয়, তাদের অবশ্যই অ্যালার্জি পরীক্ষা করা জরুরি। একমাত্র তখনই ঠিকমতো চিকিৎসা সম্ভব। অ্যালার্জি টেস্ট যে কোনো ডাক্তারের কাছেই করা সম্ভব। তবে ডাক্তার যদি অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞ হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই আরো ভালো হয়।
ছারপোঁকার প্রবেশ নিষেধ
অ্যালার্জি রোগীদের জন্য পাওয়া যায় বিশেষ ধরণের তোষক, বালিশ এবং লেপ। এগুলোতে ছারপোঁকা সহজে বাসা বাঁধতে পারে না। যদিও স্বাভাবিকভাবেই এ সবের দাম একটু বেশি হয়ে থাকে।
বাইরের ধূলিকণা
বাইরে না গিয়ে মানুষের উপায় থাকে না। তাই বাইরে থেকে এসে, অর্থাৎ বাড়িতে ঢুকেই ভালোভাবে স্নান করে নেবেন। অর্থাৎ চুল, নাক, মুখ, চোখ, হাত, মুখের ভেতর – এগুলোকে গুরুত্ব দেবেন। ওপরের বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ্য রাখলে অ্যালার্জির রোগীরা অনেকটাই অ্যালার্জি মুক্ত জীবন উপভোগ করতে পারবেন। জীবন হয়ে উঠবে আরো আনন্দময়!