বড়দিনের ছুটিতে
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে পর্যটকদের উপচেপরা ভিড়
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ ডিসেম্বর ২০১৪, ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ
জয়নাল আবেদীন,কমলগঞ্জ ::
কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত টানা ৩দিনের ছুটিতে দেশী বিদেশী পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছিল। খ্রিস্টানদের বড়দিন উপলক্ষে সহস্রাধিক লোক প্রকৃতির এ অপরুপ সৌন্দর্য্য দেখার জন্য লাঊয়াছড়ায় বেড়াতে আসেন। ফলে উদ্যানে এ তিন দিনই ছিল পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় ছিল।
উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান দেখার পাশাপাশি পর্যটকরা চা বাগান, খাসিয়া পুঞ্জি, মণিপুরী ললিতকলা একাডেমি, মাধবপুর লেক, দলই সীমান্তে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতিস্তম্ভসহ পর্যটকরা মাধবকু- জলপ্রপাতের চেয়েও আরো অপূর্ব সুন্দর হামহাম জলপ্রপাত দেখতে সেখানে ভিড় করেন। পশুপাখি ও পোকা-মাকড়ের ঝিঁ ঝিঁ শব্দ, বানরের ভেঙচি, এক গাছ থেকে অন্যগাছে উল্লুকের ছোঠাছুটি এ হচ্ছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের চির-চেনা দৃশ্য। নিস্তব্ধতা ভেদ করে ঝিঁ ঝিঁ পোকার অদ্ভুদ একটানা শব্দ শুনতে শুনতে পর্যটকরা হারিয়ে যান প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা এ গহীণ অরণ্যে। খুঁজে
পান ব্যতিক্রমী আনন্দ। প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য্যরে এ লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ‘ট্রপিক্যাল রেইন ফরেস্ট’ হিসেবে খ্যাত। শিক্ষা, গবেষণা, ইকো-টুরিজমসহ ভ্রমণ বিলাসীদের কাছে চিত্ত বিনোদনের অন্যতম আকর্ষণীয় স্পটও হয়ে উঠেছে এ উদ্যান। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে গত কয়েক বছর থেকে রেকর্ডসংখ্যক দেশী-বিদেশী পর্যটক ও ভ্রমণ পিপাসুদের সমাবেশ ঘটছে। এক সময় এখানে হাতেগুনা দর্শক পর্যটকদের আগমন ঘটত। অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি বিনোদন পিয়াসী মানুষ ছুটে এসেছেন চিরসবুজ এ বনের শ্যামল প্রান্থরে। লাউয়াছড়ার বনে রয়েছে তিনটি প্রাকৃতিক ফুট ট্রেইল বা পায়ে হাঁটা পথ। এরমধ্যে একটি ৩ ঘণ্টার, একটি ১ ঘণ্টার ও অপরটি ৩০ মিনিটের হাটাপথ। পর্যটকরা ইকো-ট্যুর গাইডের সাহয্য নিয়ে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে উদ্যানটি ঘুরে দেখতে পারেন। পর্যটকদের সুবিধার্থে এখানে নির্মিত হয়েছে তথ্যকেন্দ্র, ইকো-কটেজ, ফুট ট্রেইল, ইকো-রেস্তোরা প্রভৃতি। লাউয়াছড়ায় জমে উঠেছে পর্যটকদের মিলনের সেতু বন্ধন।
শনিবার সুনামগঞ্জ থেকে স্বপরিবারে লাউয়াছড়ায় বেড়াতে আসা পর্যটক চাকুরীজীবি সোহেল আহমদ, হবিগঞ্জের ব্যবসায়ী শরীফ আলী, আল আমীন, গৃহিনী লিমা আক্তার, কলেজ ছাত্রী সুফিয়া বেগম
জানান, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের অপরূপ প্রকৃতির অপরুপ নান্দনিক দৃশ্য তাদের মুগ্ধ করেছে। গহীন অরণ্যে বেড়াতে তারা নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্ধ্য বোধ করেন।
কুমিল্লার এনজিও কর্মী সফিকুল ইসলাম, ব্যবসায়ী আবু মো. সায়েম, কলেজ ছাত্রী নিপা আক্তার বলেন, লাউয়াছড়ার গহীন বনে বেড়াতে পেরে তারা খুবই আনন্দিত।
লাউয়াছড়া বন বিট অফিসার মাহমুদ হোসেন জানান, টানা ছুটিতে গত ৩দিনে লাউয়াছড়ায় টিকেট খাতে আয় হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা। বন্যপ্রাণী ও জীব বৈচিত্র্য রক্ষা করা সহ পর্যটকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকলে পর্যটন শিল্পে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান দেশের মধ্যে প্রথম সারিতে চলে যাবে বলে অভিজ্ঞমহলের অভিমত।