শ্রীমঙ্গলে আদিবাসীদের ভূমি দখলের প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪, ৭:২৭ পূর্বাহ্ণ
শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি ::
শ্রীমঙ্গলে ভূমি দস্যুরা আদিবাসী সম্প্রদায়ের জায়গা দখল করতে লেবু, আনারস, কাঁঠাল নিমসহ, বিভিন্ন প্রজাতির ৭০ হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এই ঘটনায় আদিবাসীদের ভিটে মাটি থেকে উচ্ছেদ করায় কয়েক হাজার পরিবার বাস্তহারা হয়ে পড়েছে। প্রতিবাদে গতকাল ১৫ ডিসেম্বর সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ক্ষতিগ্রস্ত আদিবাসীরা।
জানা গেছে, শ্রীমঙ্গলের লাখাই মৌজার আদিবাসী চা শ্রমিক, খাসিয়া ও মনিপুরী সমপ্রদায়ের নিজস্ব ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে তাদের জায়গা দখল করতে পার্শ্ববর্তী জুলেখা চা বাগান কর্তৃপক্ষ দির্ঘদীন থেকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজনের নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছিল। এর এক পর্যায়ে টাকা দিয়ে তাদের জমি কিনে নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হলে আদিবাসীরা তা প্রত্যাক্ষাণ করে। স্থানীয়রা জানান, টাকার লোভ দেখিয়ে তাদের উচ্ছেদ করতে ব্যর্থ হয়ে জুলেখা বাগানের মালিক মুরাদ মিয়া জোড় করে তাদের বাপ-দাদার ভূমি দখল করেছে। তারা আরো জানান, ২/৩শ’ ভারাটে লোকজন এনে এনে মুরাদ মিয়া তাদের জমির বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৭০ হাজার ফলজ ও বনজ গাছ কেটে সাবার করে দিয়েছে, ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলে তাদের ভিটে মাটি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এই মৌজার এক জমির মালিক জানান, গত ১২ তারিখ থেকে জুলেখা বাগানের মালিকের লোকজন নির্বিচারে তাদের জমির গাছ পালা কাটা, বসতবাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনায় তারা স্থানীয় জন প্রতিনিধি থেকে শুরু করে থানা পুলিশে ধর্ণা দিলেও কেই তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি।
আদিবাসীদের ভূমি দখল ও নির্বিচারে গাছ কাটার প্রতিবাদে শহরের চৌমহনা এলাকায় গতকাল সকাল ১০ টায় মানব বন্ধন কর্মসূচির পূর্ব ঘোষণা দিয়ে শত শত আদিবাসী নারী পুরুষ আনারস, লেবু, কাঁঠাল, নিম গাছের কেটে ফেলা ডাল পালা নিয়ে মানব বন্ধন কর্মসূচিতে যোগ দিতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে মিছিল নিয়ে আদিবাসীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অবস্থান নেন।
এসময় আদিবাসী জমির মালিক, বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজনদের সাথে একত্বতা প্রকাশ করেন। সেখানে এক সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধা ফাদার কিরন রোজারীও, পঙ্কজ কন্দ, ভূমি মালিক বিক্রম তাতীঁ, গোপাল তাতীঁ, অনুকুল তাতীঁ, মনিন্দ্র দেব, আব্দুল কাদের মহলদার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, আদিবাসী বলে তাদের কথা কেউ শোনে না। তাদের বাপ দাদার বৈধ ভিটে মাটি থেকে উচ্ছেদ ও গাছপালা কেটে লুণ্ঠন করার ঘটনায় উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ আদায়সহ ক্ষতিগ্রস্তদের ভূমি উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।
পরে আদিবাসী নেতৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে আদিবাসীরা তাদের অবস্থান তুলে নেন।