১৬ই ডিসেম্বর নিয়াজীর আত্মসমর্পণের পরও দেশের কোথাও কোথাও চলেছিল যুদ্ধ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪, ৬:২৬ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
চার দশকেরও বেশি সময় আগে ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়। তবে দেশের সমস্ত এলাকা তখনও সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়নি।
কোথাও কোথাও আরও কয়েকদিন ধরে পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে লড়াই চলেছে।
তখনকার রমনা রেসকোর্স ময়দান, যেটি বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নামে পরিচিত, সেখানে বাংলাদেশ ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনীর কাছে পাকিস্তান বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কম্যান্ডের পক্ষে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজী পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন।
তারপরও ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলার একটি এলাকায় এবং আরেকটি উপজেলায় তখনও যুদ্ধ চলছিল। ফরিদপুরের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ছিলেন আবুল ফয়েজ শাহনেওয়াজ। ফরিদপুরের উপজেলাগুলো থেকে মুক্তিযোদ্ধারা দলে দলে জয় বাংলা ধ্বনি দিয়ে ফরিদপুর জেলায় প্রবেশ করছিল। কিন্তু আমরা সে আনন্দটি করতে পারছিলাম না।
৮ নম্বর সেক্টরের অধীনে ফরিদপুর অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় তাদের নেতৃত্বে লড়াই চালায় মোকাররম-ফয়েজ বাহিনীর সদস্যরা।
আলাপকালে শাহনেওয়াজ বলছিলেন, যুদ্ধকালীন সময়ে একটি ক্যাম্পে বসে বিজয়ের খবর পেয়েছিলেন তারা। তবে পরিপূর্ণভাবে বিজয় উদযাপনের জন্য তাদেরকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল সতেরো তারিখ সকাল পর্যন্ত।
সেদিন সকাল প্রায় সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এই যুদ্ধ অব্যাহত ছিল বলে স্মৃতিচারণ করছিলেন আবুল ফয়েজ শাহনেওয়াজ। বলছিলেন, চারদিকে বিজয়ের আনন্দ থাকলেও তারা সেদিন বিজয়কে সেভাবে উদযাপন করতে পারেননি।
চারদিক থেকে আমাদের কাছে যেভাবে খবর আসা শুরু করল, সে অনুযায়ী আমরা একেবারে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলাম যে জয়টা একটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। আবুল ফয়েজ শাহনেওয়াজ বলছিলেন, ফরিদপুরের আলফা ডাঙ্গা উপজেলায় পাক সেনাদের ওয়্যারলেস টাওয়ার ভেঙে ফেলেছিল মুক্তিযোদ্ধারা।
সে কারণে নিয়াজীর আত্মসমর্পণের ব্যাপারটি পাকিস্তানী সেনারা বুঝতে পারেনি। এছাড়া তাদের কাছে কয়েক মাসের রসদও ছিল।
তাই ফরিদপুরের আলফা ডাঙ্গা উপজেলাটিতে ১৯শে ডিসেম্বর লড়াই শেষ হয়।