চা-বাগানের সকল নারী শ্রমিকদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করার দাবি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪, ৪:৫৯ পূর্বাহ্ণ
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি ::
দেশের অন্যান্য শ্রমজীবী নারীদের তুলনায় চা বাগানের নারী শ্রমিকদের জীবন ধারা ও কাজের ধরন সম্পূর্ণ আলাদা। ভোরে ঘুম থেকে উঠে সকাল ৮ টার মধ্যে কাজে বেরিয়ে পড়তে হয়। স্থানভেদে কোথাও চার, পাঁচ মাইল পায়ে হেটে গিয়ে কাজ করতে হয়। চা পাতা তোলা ও চা গাছ ছাঁটাই করার মতো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ও কষ্টকর কাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিকরা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করে দৈনিক মজুরি পাওয়া যায় মাত্র ৬৯ টাকা। অথচ অর্থনৈতিক উন্নয়নে চা বাগানের নারী শ্রমিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু বাংলাদেশের সকল নারী চা শ্রমিককে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে অধিকার সম্পন্ন নাগরিক ও মর্যাদা সম্পন্ন মানুষ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা যায়নি। তাই চা শিল্পের এই এসব ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত সকল নারী শ্রমিকদের মর্যাদা সম্পন্ন মানুষ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত, নারী চা শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নারীর সামাজিক অবস্থান রূপান্তর প্রক্রিয়ায় ভূমিকা পালন করতে হবে।
গতকাল ১৪ ডিসম্বের রবিবার দুপুরে কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ চা শ্রমিক নারী ফোরাম’ এর আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের আহ্বায়িকা গীতা রানী কানু উপরোক্ত বক্তব্য তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে গীতা রানী কানুর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক নারী ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়িকা লছমি রানী রাজভর, ইউপি সদস্য মেরী রালফ, লংলা ভেলীর হেমন্তী কালোয়ার, বালিশিরা ভ্যালীর রীতা রানী দাস, লস্করপুর ভ্যালীর স্বপ্না রানী দাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত চা শ্রমিক সন্তান মোহন রবিদাস প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে চা শিল্পে কর্মরত মহিয়সী নারীরা বিরাট ভূমিকা পালন করছেন। কিন্তু এদের উন্নতির জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। নারী চা শ্রমিকরা চা বাগানের লেবার লাইনে এমনভাবে বসবাস করে যেন বাংলাদেশ এবং বাঙালি জনগোষ্ঠী থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপের বাসিন্দা। অশিক্ষিত এই নারী শ্রমিকরা চা বাগানের বাইরের পৃথিবী সম্পর্কে ভীত। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য চা বাগানের নারী শ্রমিকদের রাষ্ট্রের অধিকার সম্পন্ন নাগরিক ও মর্যাদা সম্পন্ন মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।