রাজধানীতে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের কর্তব্যে অবহেলায় চোখ নষ্টের অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ ডিসেম্বর ২০১৪, ৭:০৫ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
ডান চোখে ছানি নিয়ে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মিরপুরের আলেয়া খানম।
গত ৩রা ডিসেম্বর তার চোখে প্রথম দফা অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর চিকিৎসকরা জানান অস্ত্রোপচারের সময় চোখে জীবাণু সংক্রমণ ঘটেছে।
আলেয়া খানম জানান “চিকিৎসকদের পরামর্শ-মত চোখে লেন্সও লাগিয়েছি কিন্তু কোনও উন্নতি নেই। তারা প্রথম দিন অপারেশনের পরদিন অজ্ঞান না করেই আবার ওটিতে নিয়ে অপারেশন করে। তারপর আবার তৃতীয় দফা অপারেশন করা হয়। কিন্তু চোখে কিছুই দেখছি না”।
অপারেশনের দুয়েকদিনের মধ্যেই হাসপাতাল ছাড়তে পারবেন বলে জানানো হলেও এরপর আটদিন পেরিযে গেছে।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় একটি সরকারি হাসপাতালে চক্ষু চিকিৎসার পর কর্তব্যে অবহেলার এই অভিযোগ এনেছেন বেশ কয়েকজন রোগী এবং তাদের স্বজনরা।
তারা বলছেন এ মাসের শুরুর দিকে তারা হাসপাতালটিতে চোখের ছানির অস্ত্রোপচার করার পর থেকে তাদের অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে।
একজন চিকিৎসক একাই সাতজন রোগীর চোখের ওই অস্ত্রোপচার করেন।
আলেয়া খানম এবং তার পরিবারের সদস্যরা জানান তার চোখে লেন্স লাগানো হলেও শেষপর্যন্ত তা আবার খুলে ফেলা হয়।
নিজেদের চোখ দিয়ে আদৌ দেখতে পাবেন কি না সে বিষয়ে শংকাহীন হতে পারছেন না এইসব রোগীরা।
কিন্তু প্রায় দশ হাজার টাকা দামের লেন্স আনতে একরকম চাপ দিয়েছিল হসপিটাল কর্তৃপক্ষই।
আলেয়া খানমের জামাতা মাহবুবুর রহমান জানান, “চিকিৎসক বলে দিয়েছেন তার পছন্দমত লেন্স না আনলে তিনি অপারেশন করেন না। আমরা ওষুধ লেন্স সব এনে দেই। কিন্তু রোগীর তো কোনও উন্নতি নেই”।
তাদের সামর্থ্য থাকলেও এত দামি লেন্স লাগানোর সামর্থ্য নেই যাদের তারা লাগিয়েছেন কমদামের লেন্স।
কিন্তু ফলাফল সবারই এক বলে জানান রোগী এবং তাদের স্বজনরা।
তরুণ আইনুল হক, পোশাক শ্রমিক সেলিনা জানান কিংবা পঞ্চাশোর্ধ আবুল কালামকেও রিলিজ দেয়া হয়েছে তবে তারা এখনই হাসপাতাল ছাড়তে চাইছেন না।
রোগী বা তাদের স্বজনরা এখানে চিকিৎসকদের কর্তব্যে অবহেলা বা ব্যর্থতার প্রশ্ন তুললেও, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করছে অস্ত্রোপচার যথাযথভাবেই সম্পন্ন করা হয়েছে।
হাসপাতালের পরিচালক জালাল আহমেদ বলেন, তাদের দৃষ্টি আগেও কম ছিল। তারা হয়তো আশা করেছিলেন একদিন দুদিনেই সুস্থ হয়ে যাবেন । উন্নত বিশ্বে যেভাবে চিকিৎসা হওয়ার কথা সেভাবেই করা হয়েছে। সাতজনের কথা বলা হচ্ছে তবে দুজন এরইমধ্যে সুস্থ হয়ে ফিরে গেছেন। বাকিরা সুস্থতার পথে। তবে সময় লাগবে”।
জীবাণু সংক্রমণ কিভাবে ঘটেছে তা অনুসন্ধানের জন্য তদন্ত কমিটি করা হয়েছে বলে জানান হাসপাতাল পরিচালক।
এছাড়া এই রোগীদে বিশেষ সেবা দেযার জন্য আলাদা চিকিৎসক বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
তবে এরপরও নিজেদের চোখ দিয়ে আদৌ দেখতে পাবেন কি না সে বিষয়ে শঙ্কাহীন হতে পারছেন না এই রোগীরা।