বর্ণাঢ্য আয়োজনে সিলেটে পুনঃনির্মিত শহীদ মিনারের উদ্বোধন
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ ডিসেম্বর ২০১৪, ৭:২৯ পূর্বাহ্ণ
পুনঃনির্মিত সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল ১০ ডিসেম্বর বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় পতাকা উত্তোলন ও পায়রা উড়িয়ে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
পতাকা উত্তোলন ও পায়রা ওড়ানোর পর সন্ধ্যা ৬টায় উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে সাড়ে ৬টায় শহীদ মিনারের মুক্তমঞ্চে শুরু হয় সুধী সমাবেশ। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী ছাড়াওসমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী ও সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
শহীদ মিনার উদ্বোধন উপলক্ষে পুরো এলাকাকে সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। চারদিকে রঙিন ফেস্টুন, রাস্তার বিপরীত পাশের দেয়ালগুলোতে তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্থিরচিত্র আর মূল সড়কে আঁকা হয়েছে বিশাল আল্পনা।
আয়োজন করা হয়েছে সাত দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের। দুপুর থেকেই লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে পুরো শহীদ মিনার এলাকা। বিকেল সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন হলেও মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় সন্ধ্যা থেকে।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আসেন অতিথিরা। শুরুতেই তারা উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। পরে শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। প্রথমে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নেতৃত্বে মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
সুধী সমাবেশ শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীসহ জাতীয় ও স্থানীয় শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন।
পঁচিশ বছর আগে সিলেটে চারজন মুক্তিযোদ্ধার সাহসিক প্রচেষ্টা ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের সহযোগিতায় চৌহাট্টায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। সে সময়ের প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন আর সামাজিক সমর্থনে তৈরি শহীদ মিনার কালস্রোতে সিলেটের সাংস্কৃতিক চেতনার প্রতীক।
২০১৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তৌহিদি জনতার মিছিল থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হামলা চালায় জামায়াত-শিবির। তাদের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শহীদ মিনার। এরপর সিলেটের সংস্কৃতি কর্মীরা শহীদ মিনার নতুন করে নির্মাণের জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রীর নির্দেশে শহীদ মিনার পুনঃনির্মাণের কাজ শুরু করে সিসিক।
প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যায়ে পুনঃনির্মিত নান্দনিক শিল্পকর্মের এ স্থাপত্যে প্রস্ফুটিত হয়েছে চা বাগানের ফাঁকে ভোরে নবদিগন্তে সূর্যের রক্তিম আলোকছটা আর আবহমান বাংলার সংগ্রামী চেতনার বিদ্রোহের চিত্র।