কুলাউড়ায় জুয়া ও অশ্লীল নৃত্য আয়োজনের প্রতিবাদ করায় নিরাপত্তাহীনতায় ব্যবসায়ী
প্রকাশিত হয়েছে : ৯ ডিসেম্বর ২০১৪, ৫:২৫ পূর্বাহ্ণ
বিশেষ সংবাদদাতা ::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে হাউজি বাম্পারের নামে জুয়া ও অশ্লীল নৃত্য আয়োজনের প্রতিবাদ করায় পীরেরবাজারের ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতির ছেলেকে মোটরসাইকেলসহ অপহরণ করা হয়েছে। পরে পুলিশের তৎপরতায় মোটরসাইকেলসহ অপহৃত ছেলেকে উদ্ধার করে অপহরণকারী দুইজনকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ নিয়ে অপহরণকারীরা মামলার বাদিকে ফোনে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় নিরাপত্তা চেয়ে ব্যবসায়ী নেতা রাজা মিয়া গতকাল ৮ ডিসেম্বর সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় পীরেরবাজারে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।
পীরেরবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি রাজা মিয়া বলেন, পীরেরবাজার সংলগ্ন কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের বৈদ্যনাথপুর গ্রামে যাত্রা, হাউজি-বাম্পার, জুয়া ও অশ্লীল নৃত্য আয়োজনে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়। এর প্রতিবাদে ২৩ নভেম্বর মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত স্মারকলিপি দিয়ে তৌহিদী জনতার ব্যানারে ২৪ নভেম্বর সোমবার বিকাল চার টায় স্থানীয় পীরেরবাজারে স্কুল মাঠে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা চলাকালে সন্ত্রাসীরা লাঠিসোটা নিয়ে মহড়া দেয়। মহড়ার এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতার সাথে সংঘর্ষ বাঁধলে জনতা চারটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনার জের ধরে ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যার পর শমশেরনগর বাজারে পীরেরবাজারের দুইটি সিএনজি অটোরিক্সায় হামলা চালানো হয়। পাশাপাশি যাত্রার নামে অসামাজিক কাজের আয়োজনে প্রতিবাদ সভায় ব্যক্তব্য রাখায় ১ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে পাঁচটায় শমশেরনগরে রাজা মিয়ার ছেলে শাহীন আহমমেদ ও ভাগ্নে সামাদ আলীর মোটরসাইকেল সহ রাজু (২৫), হারুন (৩০), জামাল খান (২৬) শিংরাউলী গ্রামের শেখ রাজু (২৫), পীরের বাজারের জামাল (২৩) ও রাঙ্গাটিলা গ্রামের খলিল (৩২) গংরা অপহরণ করে।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক শমশেরনগর ফাঁড়ি পুলিশের একটি দল শমশেরনগর বাগান সড়কের সোহানের বাসা থেকে মোটরসাইকেলসহ অপহৃত শাহীন ও সামাদকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পুলিশ সোহান ও রাজু মিয়া নামে দুইজনকে গ্রেফতার করে।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী নেতা আরো বলেন, পুলিশি তৎপরতা থাকলেও তিনি যেভাবে থানায় মামলা করেছিলেন সে ধারায় মামলা রুজু করা হয়নি। পরবর্তীতে ৩ ডিসেম্বর কুলাউড়া থানায় আরো একটি অভিযোগ করেন বলে ব্যবসায়ী নেতা রাজা মিয়া জানান। বাকী আসামীদের অবিলম্বে গ্রেফতারেরও দাবি জানানো হয়। ব্যবসায়ী নেতা আরো বলেন, এখন তিনি একা হুমকির মুখে নন। পীরেরবাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও মানুষজনও হুমকিতে আছে। গত কয়েক দিন ধরে এ এলাকার লোকজন শমশেরনগর বাজারে যেতে সাহস পাচ্ছে না। তাই তার পরিবারের সাথে সাথে পীরেরবাজারের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষজনের সার্বিক নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনিক সহযোগিতা কামনা করে বাধ্য হয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, শমশেরনগরের ব্যবসায়ী মো. আনোয়ার হোসেন, হাজীপুর ইউপি সদস্য আব্দুল মুনিম, মুক্তিযোদ্ধা আইয়ূব আলী, মাও. আলতাবুর রহমান, পীরেরবাজার বণিক কল্যান সমিতির সম্পাদক গুলজার আহমদ, হাজী রহমত আলী, মাও. শামছুদ্দীন, শামীম আহমদ, শওকত আলী, রফিজ আলী, সুলতান আহমদ ও আব্দুল খালিক প্রমুখ।