কুলাউড়ায় মেরিনা চা বাগানে ৩ চোরকে মারধরের পর চোখে চুন দিয়েছে শ্রমিকরা
প্রকাশিত হয়েছে : ১ ডিসেম্বর ২০১৪, ১২:২০ অপরাহ্ণ
কুলাউড়া প্রতিনিধি
কুলাউড়া উপজেলার মেরিনা চা বাগানে ৩ চোরকে গণধোলাই দিয়েছে শ্রমিকরা। মারধরের পরে ২ জনকে চোখে চুন লাগিয়ে দেয় তারা। গুরুতর অবস্থায় রুবেল ও মুকিত মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিয়য়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনকে আসামী করে কুলাউড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার ০১ ডিসেম্বর শ্রমিকরা এ কর্মবিরতি পালন করে। মামলা প্রত্যাহার না হলে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালনের ডাক দেয়ার হুমকিও দিয়েছে তারা।
বাগানের শ্রমিকরা জানায়, কুলাউড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিসেস নেহার বেগমের বাসায় কাজ করত বাগানের বাংলা টিলার এক মহিলা শ্রমিক। সে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বাসার সোনা গয়না চুরি করে পালিয়ে বাগানে চলে আসে। গত ২৯ নভেম্বর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বাগানে গিয়ে ওই মহিলা শ্রমিকের ঘরে মালামাল রয়েছে। কিন্তু ওই মহিলা শ্রমিকের পরিবারের লোকজন ভাইস চেয়ারম্যানকে উল্টো অবরুদ্ধ করে রাখে।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিষয়টি স্থানীয় জয়চন্ডী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ কমরুকে অবহিত করেন। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বারসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাগান পঞ্চায়েতসহ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানকে মুক্ত করেন বলে জানান জয়চন্ডী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন কমরু।
তিনি আরও জানান, এসময় বাগানের বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা রুবেল (২৫), মুকিত (৩৫) ও রইস (৫২) নামক ৩ ব্যক্তিকে মারধর করে ২ জনের চোখে চুন লাগিয়ে দেয়। বাগান শ্রমিকদের মতে এরা গরু চুর, ডাকাত ও নারী নির্যাতনকারী।
মারধরের শিকার রুবেল ও মুকিতকে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করাহলে তাদের অবস্থায় গুরুতর হওয়ায় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবশ্য বাগান কর্তৃপক্ষ রাতে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এদিকে গণধোলাইর শিকার শ্রমিকদের পক্ষে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, বাগান পঞ্চায়েতের সভাপতি ও সম্পাদকসহ ১৭ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮ জনকে আসামী করে রোববার ৩০ নভেম্বর আহত রইস মিয়ার স্ত্রী ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে কুলাউড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে থানায় মামলা দায়েরের খবর পেয়ে সোমবার সকাল থেকে বাগানের শ্রমিকরা কাজ না করে বাগানের মন্ডপে অবস্থান নেয়। বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি খোকা নায়েক ও সম্পাদক ওয়াসিম মিয়াসহ বাগানের নিরীহ শ্রমিকদের উপর থেকে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। নয়তো বাগানে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করা হবে।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানা অফিসার ইনচার্জ অমল কুমার ধর জানান, বাগান কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে কোন উপায় নেই। দু’জন মানুষকে তারা মেরে তাদের চোখে চুন লাগিয়ে দিয়েছে। মামলায় যারা আসামী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।