ই তথ্য সেবা
আয় বাড়ছে উদ্যোক্তার
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ নভেম্বর ২০১৪, ২:০২ অপরাহ্ণ
মহ্সীন মুরাদ
সদর উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন থেকে ভাল আয় হচ্ছে ৪ নং কাগাবলা ইউনিয়নের ই তথ্য সেবা কেন্দ্রে। এতে ইউনিয়নবাসী যেমন সেবা নিয়ে সন্তোষ্ট আছেন, তেমনি সাবলম্বী হচ্ছেন উদোক্তা। কিছুদিনের মধ্যেই বিটিসিএল এর ইন্টারনেট প্রতিটা ইউনিয়নে সংযোগ দেয়া হবে। তাতে জনগণ আরো সহজভাবে সেবা গ্রহণ করতে পারবে। পূর্বের তুলনায় গ্রাহকের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। বর্তমানে বেশিরভাগ গ্রাহক ই হচ্ছেন বিদেশ যাত্রীরা। তারা পাসপোর্ট সহ অন্যান্য তথ্যাধি ইমেইল এর মাধ্যমে দেয়া নেয়া করছেন। সে হিসেবে এ ইউনিয়নে ইমেইলের গ্রাহক ই বেশি। সকল সরঞ্জমাধি ঠিক থাকলে ই তথ্য সেবা থেকে প্রতিমাসে ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করা যাচ্ছে। এমনটা দাবি করেছেন উদ্যোক্তা লুৎফুর রহমান।
সদর উপজেলার আওতাধিন কাগাবলা ইউনিয়নে সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, এখানে অন্যান্য বিষয় থেকে অনেকটা ভাল চলছে ই তথ্য সেবা কেন্দ্র। বিভিন্ন কাজের জন্য এখানে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ জন জনসাধারণ এসে ভিড় করেন। এতে জনগণ যে ইউনিয়মুখী হচ্ছেন তা বুঝা যায়। অন্যদিকে ই তথ্য সেবার গ্রাহক যত বাড়বে তাতে উদ্যোক্তার লাভ। তবে এ কেন্দ্রের ইন্টারনেট সেবা অনেকটা দূর্বল রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সমস্যা কিছুদিনের মাঝেই যে সমাধান হবে এমনটা আশা করছেন ইউনিয়ন কর্তপক্ষ।
ই-তথ্য সেবা থেকে মূলত কম্পিউটার কম্পোজ, ই-মেইল, জন্মনিবন্ধন, ছবি তোলা, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন সরকারি ফরম সরবরাহ, জমির খতিয়ানের জন্য আবেদন ও সরবরাহ, ফটোকপি, কৃষি তথ্য, শিক্ষা তথ্য, চিকিৎসা তথ্য প্রদান, সরকারিভাবে প্রবাস যাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন ইত্যাদি সেবা দেওয়া হয়। এখানে, সাধারণ কম্পোজের জন্য ২০ থেকে ২৫ টাকা, ফটোস্টেট প্রতি কপি ১ টাকা, ফটোপ্রিন্ট ৫ টাকা ও ইলেক্ট্রনিক্স মেইল ১০ থেকে ২০ টাকা, অনলাইন ফরম ফিলাপ ৩০ থেকে ৪০ টাকা নেয়া হয়। তুলনামূলকভাবে বাইরের দোকান থেকে ইউনিয়ন পরিষদের ই-তথ্য সেবায় কম খরচ হয় বলে দিনদিন বেড়েই চলছে গ্রাহকের পরিমাণ।
কমপোজ করাতে আসা আগিউনের এলাকার আব্দুল আহাদ বলেন, আমি এখানে এসেছি একটা জরুরি কমপোজ করানোর জন্য। এখানেই এসেই প্রথমে সুযোগ পেয়ে গেছি। তাতে তাড়াতাড়ি চলে যেতে পারবো। না হলে অনেক দিন এসে ভির পাই তাতে সময় ব্যয় হয়। আমাদের ইউনিয়নে ই তথ্য সেবা থাকায় আমাদের অনেক উপকারে হচ্ছে। দিনদিন এর গ্রাহক আরো বাড়বে মনে করি।
কাগাবলা এলাকার আশরাফ নামে এক যুবক এসেছেন ইমেইল পাঠানোর কাজে। তার আলাপকালে সে বলে, ই তথ্য থেকে প্রায় ই ইমেইল করি। এখানে খুবই নিম্নতর একটা খরচের মাধ্যমে কাজ করা যায়। তবে একটা সমস্য আছে সেটা হল প্রায় এখানে নেট থাকে না। এরকম সমস্যা দেখান উদ্যোক্তা এ জন্য বসে থাকতে হয় অনেকক্ষণ।
উদোক্তা লুৎপুর রহমান বলেন, আমাদের ই তথ্য সেবা থেকে অনেকে সেবা পাচ্ছেন। তার মাঝে একেক দিন একেভাবে। যদি গ্রাহক না থাকে তাহলে নিম্নতর ৫ জন তো হয় ই। ঊর্ধ্বে ২৫ থেকে ৩০ জন। যদি ২৫ থেকে ৩০জন গ্রাহকেদের সেবা দিতে পারি তাহলে প্রতি মাসে ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
আপনাদের এখানে কোন কাজ বেশি হয় এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের এখানে কাজ হয় যেমন ফটোস্টেট, জন্মনিবন্ধনকার্ডে ইস্যু, কমপোজ, ইত্যাদি। তবে বেশি হয়ে থাকে ইমেইল। কারা ইমেইল করে থাকেন এ জবাবে তিনি বলেন বেশিরভাগ বিদেশযাত্রীরাই ইমেইল পাঠান। কারণ আমাদের বাজার থেকে শহর অনেক দূরে তাই বিদেশযাত্রীরা বাজার আর কোথায় এতো স্বল্প মূল্যে সুযোগ না পেয়ে আমাদের এখানে ভির জমান।
আপনাদের ইন্টারনেটের দূর্বল ও গ্রাহকরা এসে বসে থাকতে হয় এমন অভিযোগে আপনার বক্তব্য কী? এর জবাবে তিনি বলেন, আমাদের মোডেম দিয়ে নেট ইউজ করতে হয়। গ্রামিনের মোডেম আর রবি সিম। এখানে জুম আল্ট্রার নেট পাওয়া যায় না। তাই এটা ব্যবহার করি। এটা যে একেবারে মিথ্যে তা নয়। এটা শুধু জন্মনিবন্ধন কার্ড ইস্যুতে সমস্যা হয় মাঝে মাঝে। এটা সার্ভার প্রভলেম। কিছুদিনে মাঝে বিটিসিএল ইন্টারনেট আমাদের দেয়া হবে তখন আরো বেশি সেবা দেয়া যাবে।
ইউনিয়নের সচিব একে আব্দুল বারী বলেন, আমাদের ইউনিয়নে গ্রাহকের সংখ্যা অনেকটা বেড়েছে। ই তথ্য- সেবায় প্রতিদিন অনেক লোক আসেন। তারা এখান থেকে সেবা নিয়ে সন্তেুাষ্ট আছেন।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এম এ সালাম বলেন, ই-তথ্য সেবা আমাদের জন্য একটি ভাল দিক। এ থেকে জনগণের উন্নয়নের পাশাপাশি সাবলম্বী হওয়ার একটা সুযোগ রয়েছে। আমি মনে করি এটা সরকারের অনন্য পদক্ষেপ। এর কারণে গ্রাম এলাকার লোকেরা ইন্টারনেটের সেবা পাচ্ছে। এ মাসেই সম্ভবত আমাদের আরো দ্রুত ইন্টারনেট সেবা দেয়ার জন্য বিটিসিএল এর নেট সংযোগ দেয়া হবে।