বিশ্বের ত্রিশ শতাংশের বেশি নারীই পারিবারিক নির্যাতনের শিকার
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ নভেম্বর ২০১৪, ৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ
নারী-শিশু ডেস্ক ::
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক রিপোর্ট বলছে যে, পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধের যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, তা যথার্থ নয়। আর সে কারণে বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
বেশ কয়েকটি গবেষণার ফলাফল থেকে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করে তা গত শুক্রবার প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ১০ থেকে ১৪ কোটি নারী যৌনাঙ্গচ্ছেদের শিকার হয়েছে এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে ১৮ বছরের কম বয়সি অন্তত ৭ কোটি নারীকে বিয়ে দেয়া হয়েছে। গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, বিশ্বের মোট নারীর ৭ শতাংশ জীবনের যে কোনো সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
বিভিন্ন দ্বন্দ্ব-সংঘাত এবং মানবিক বিপর্যয়ে এ ধরনের সহিংসতার মাত্রা সবচেয়ে বেশি হয়েছে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এতে অনেক নারী শারীরিক নির্যাতনের কারণে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন।
লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন এর অধ্যাপক শার্লট ওয়াটস বলেছেন, ‘‘কোনো জাদুর ছড়ি নারী ও মেয়েদের এই সহিংসতার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে না। তবে এ সব সহিংসতা এটা বুঝিয়ে দেয় যে, নারী-পুরুষের কোনো কোনো আচরণে পরিবর্তন আনাটা জরুরি এবং একমাত্র তাহলেই হয়ত এক প্রজন্মের মধ্যেই সাফল্য অর্জন সম্ভব।”
গবেষণায় আরো দেখা গেছে, নানা ধরনের আইন পরিবর্তনের পরও নারীরা স্বাস্থ্য সেবা, কর্মক্ষেত্র এবং আইনি সহায়তার ক্ষেত্রে সহিংসতা এবং বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন৷
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফিজিশিয়ান ক্লদিয়া গার্সিয়া-মোরেনো বলেছেন, ‘‘কোন কোন স্থানে বা ক্ষেত্রে নারী ও শিশুরা নির্যাতনের শিকার হতে পারে, সেগুলো চিহ্নিত করা এবং যাঁদের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছেন তাঁদের উপযুক্ত শাস্তি দেয়ার মাধ্যমে এ অবস্থার উন্নতি করা যেতে পারে।”
অধ্যাপক শার্লট ওয়াটসের মতে, প্রতিটি দেশের সরকার যদি এটা উপলব্ধি করতে পারে যে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা কম হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে তাহলে এর বিরুদ্ধে তারা অবশ্যই লড়বে। এছাড়া বিশ্বনেতারাই পারেন আইন করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বৈষম্য দূর করে নারীদের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও সহিংসতার হার কমাতে। ওয়াটস বলেন, ‘‘সব দেশের রাষ্ট্র প্রধানদের অবিলম্বে উচিত এ ধরনের গবেষণাকে উৎসাহিত করা এবং সেখান থেকে তথ্য নিয়ে সে অনুযায়ী এর বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নেয়া।”