প্রকাশ্য দিবালোকে কেটে নেয়া হচ্ছে লাউয়াছড়া উদ্যানের বৃক্ষ
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ নভেম্বর ২০১৪, ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ
জয়নাল আবেদীন ::
প্রকাশ্য দিবালোকে কেটে নেয়া হচ্ছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বৃক্ষসম্পদ। উদ্যানের ভেতর দিয়ে সড়ক ও রেলপথ দিয়ে অবাধে গাছ পাচার হচ্ছে। গত ১৮ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকালে গাছ চুরি বিষয়ে সরেজমিন অনুসন্ধানকালে রেলপথ দিয়ে ট্রলি যোগে জাতীয় উদ্যানের ভেতরে গাছ চুরির এমন দৃশ্যই দেখা যায়।
গত মঙ্গলবার বিকালে লাউয়াছড়া উদ্যানের ভেতরে গেলে দেখা যায়, রেলপথ দিয়ে গাছ চুরির হিড়িক শুরু হয়েছে। গাছ চোরেরা প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে বনের ভেতরে প্রবেশ করে বৃহদাকার চাম, গর্জন ও আওয়াল জাতের ৮টি গাছ কেটে ফেলা হয়। প্রায় ২০ জনের শ্রমিক দল মিলে গাছ কেটে দ্রুত সময়ের ভেতরে খণ্ডাংশ করে ফেলে। গাছ চোরদের তৈরিকৃত ট্রলি দিয়ে খণ্ডাশ দ্রুত স্থানান্তর চলছে। বন বিভাগের লোকবলের কোন হদিস পাওয়া যায়নি। এভাবে প্রতিনিয়ত জাতীয় উদ্যানের মূল্যবান গাছ পাচার হয়ে যাওয়ায় বিরান ভূমিতে পরিণত হচ্ছে লাউয়াছড়া। ফলে বন্যপ্রাণির জন্য হুমকি প্রকট আকার ধারণ করছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে চিহ্নিত গাছচোরদের দিয়ে চলছে বনপাহারা কার্যক্রম! বন বিভাগের সাথে এক হয়ে কাজ করছে ইউএসএআইডি’র আইপ্যাক-নিসর্গ প্রকল্পের (বর্তমানে ক্রেল প্রজেক্ট) কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটি (সিএমসি) বা সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটি। বনের চারপাশের জনপদের অধিবাসীদের প্রতিনিধি ও সংশিষ্ট কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ২৯ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি প্রতিমাসে একবার সভা করে সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে বন ব্যবস্থাপনা ও বন সম্পর্কিত বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে। অথচ তার বাস্ত কোনো ফলাফল পরিলক্ষিতই হচ্ছে না।
লাউয়াছড়া বনবিট কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, এক সপ্তাহ আগে আটককৃত ৮১ ফুট গাছ উদ্ধার করা হচ্ছে। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের রেঞ্জ কর্মকর্তা (বন্যপ্রাণি) মো. মরতুজ আলী বলেন, জাতীয় উদ্যানের গাছগাছালি রক্ষায় তারা বদ্ধপরিকর। রেলপথ দিয়ে গাছ চুরির বিষয়টি তিনি জানেন না। তিনি বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তারা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। বিভিন্ন সময়ে পাচারকারীদের হামলায় বনকর্মীরা আহত হয়েছেন। স্বল্প জনবল নিয়ে উদ্যান রক্ষার বিষয়টি কঠিন হলেও তারা যথারীতি দায়িত্ব পালন করছেন।