টেংরাটিলায় পরিত্যাক্ত গ্যাস ফিল্ডে উদগীরণ, এলাকাবাসী আতংকে
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ নভেম্বর ২০১৪, ৭:৫১ পূর্বাহ্ণ
সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা : :
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে টেংরাটিলায় গ্যাসের আতংক কমেনি। গত ১৭ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে বাপেক্সের এমডি মাহবুব সরোয়ারসহ বিশেষজ্ঞ দল গ্যাস উদ্গীরণের বিপজ্জনক এলাকা পরিদর্শনে আসেন।
উপস্থিত সবাইকে অপেক্ষমান রেখে সাংবাদিক বা বিক্ষব্ধ জনতাদের সন্তোষজনক কোনো আশ্বাস না দিয়ে বাপেক্সের এমডিসহ বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এসময় ইউএনও কামরুজ্জামানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা নাইকোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান সংকট নিরসনের আশ্বাস দেন বিক্ষুব্ধ জনতাকে। ইউএনও কামরুজ্জামান আরও বলেন, দেশের জাতীয় সম্পদ বিধ্বংসের ক্ষতিপূরণ চেয়ে নাইকোর সাথে বাংলাদেশ সরকারের মামলা নিষ্পত্তি হলে গ্যাস উত্তোলন ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে পেট্রোবাংলাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করবেন বলে বাপেক্সের এমডি মাহবুব সরোয়ার তাকে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ অক্টোবর থেকে গ্যাসের চাপ বাড়ায় গত শনিবার থেকে এ পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ৩টি পরিবার অন্যত্র সরে গেছে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী টেংরাটিলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় দুটিসহ আরও কয়েকটি পরিবার ঝুঁকির মুখে। অপরদিকে, ঘরের ফাটল, রাস্তাঘাট, পুকুর, খালবিলসহ যত্রতত্র গ্যাস উদ্গীরণের চাপ বাড়ায় শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা রাতদিন আতংকে কাটাচ্ছেন। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকসহ এলাকাবাসী নিরাপদে পথ চলতে সাহস পাচ্ছেন না। উদ্গীরণকৃত গ্যাসের দুর্গন্ধ ও তেজষ্ক্রিয়ায় রোগব্যাধি ছাড়াও পরিবেশ ক্রমশ দূষিত হয়ে পড়ছে।
ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলোর অন্যত্র থাকার খরচ প্রদানের আশ্বাস দেওয়া সত্বেও সরে যাওয়া পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে এলাকাবাসীর অনেকেই অভিযোগ করেন।
উল্লেখ্য, বিগত ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি ও ২৪ এপ্রিল দু’দফা বিস্ফোরণে প্রোডাকশন ক’পের রিগ ভেঙে প্রচণ্ড গর্জন ও কম্পনসহ ২০০ থেকে ৩০০ ফুট উপরে ওঠানামা করে থাকে আগুন। তখন মাটির উপরিভাগে ৩ বিসিক গ্যাস পুড়ে যাওয়া এবং ৫’৮৯ থেকে কমপক্ষে ৫২ বিসিক রিজার্ভ গ্যাস ধ্বংস হওয়া ছাড়াও টেংরাটিলা, আজবপুর, গিরিশনগর, খৈয়াজুড়ি ও শান্তিপুর গ্রামের লোকজনের ঘরবাড়ি, গাছপালা ধ্বংসসহ পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। তখন ব্যাপক আন্দোলনের পর ক্ষতিগ্রস্তদের নামমাত্র ক্ষতিপুরণ দিয়ে কিছুদিন পর নাইকোর সরঞ্জামাদিসহ সবকিছু গুটিয়ে সেখান থেকে চলে যায় তারা।