ফলোআপ
রাজনগরে স্বামীর হাতে খুন হন সিতাই রাণী বিশ্বাস, গ্রেপ্তার ৪
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ নভেম্বর ২০১৪, ৬:০১ পূর্বাহ্ণ
রাজনগর প্রতিনিধি ::
স্বামীর সঙ্গে ছিলেন ভারতের কৈলাশহরে। তিন মাসের অন্তঃসত্তা ছিলেন সিতাই রাণী বিশ্বাস (৩০)। স্বামী নিখিল বিশ্বাসের সঙ্গে ঝগড়ার একপর্যায়ে তাকে লাথি মারেন নিখিল। এতে তিনি আহত হলে গর্ভপাত ঘটে। এ নিয়ে কৈলাশহর থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করার পরই তাকে খুন করার প্রস্তুতি নিতে থাকেন নিখিল বিশ্বাস। গত ১ নভেম্বর শনিবার তাকে নিয়ে আসে রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের কানিকোল গ্রামে। সেখানে থেকেই পরিকল্পনা করতে থাকে হত্যার। পরে ৩ নভেম্বর সোমবার রাতে ঠান্ডা মাথায় তাকে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয় রাজনগরের ক্ষেমসহস্র গ্রামের বড়বন্দের ধানি জমির পাশে। ঘটনাটি চাপা দেয়া এবং ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বুঝানোর জন্যই লাশ বিবস্ত্র করে রাখা হয়। কিন্তু পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে রাজনগর উপজেলার কানিকোল গ্রামের এক নারীসহ ৪ জনকে আটক করে। এর পরই বেরিয়ে হত্যার রহস্য। রাজনগর থানার পুলিশ ওই চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হল; উপজেলার কানিকোল গ্রামের বিষ্ণু নমসুদ্র (৫৫), তার ছেলে বিকাশ নমসুদ্র (২০), স্ত্রী রাণী নমসুদ্র (৪৫) ও নিখিলের সৎভাই নিশি নমসুদ্র (৪৫)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার রাঙ্গজিয়ল গ্রামের মৃত সুরেন্দ্র বিশ্বাসের মেয়ে নিহত সিতাই বিশ্বাস। সেখানে বিরেন্দ্র বিশ্বাস নামে তার এক ভাই রয়েছে। ৩ বছর বয়সে মা-বাবা মারা গেলে তার খালা ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের সুকময় বিশ্বাসের স্ত্রী মতই বিশ্বাসের কাছে বড় হয় সে। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামে মৃত সদয় বিশ্বাসের ছেলে নিখিল বিশ্বাসের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই নিখিল বিশ্বাস তার মামার বাড়ি রাজনগর উপজেলার কানিকুল গ্রামে বসবাস করত। বেশ কিছু দিন থেকে সে স্ত্রীকে নিয়ে ভারতের ত্রিপুরার কৈলাশহরে চলে যায়।
গত ১ নভেম্বর সিতাই রানী বিশ্বাসকে নিয়ে বাংলাদেশে এসে ৩ নভেম্বর সোমবার রাতে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখে ক্ষেমসহস্র গ্রামের বড়বন্দের ধানি ক্ষেতের পাশে। হত্যা করে রাতেই সে রাজনগর এলাকা ছেড়ে চলে যায়। ৪ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
এদিকে এ ঘটনায় ওই দিন অজ্ঞাতদের আসামী করে গ্রামপুলিশ বাদি হয়ে মামলা করেন। পরে গত ১১ নভেম্বর রাজনগর থানায় নিখিল বিশ্বাস ও গ্রেপ্তার চার জনসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে রাজনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন নিহতের ভাই বিরেন্দ্র বিশ্বাস। রাজনগর থানার পুলিশ আটক ৪জনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহমান তরফদার বলেন, গ্রেপ্তার ৪ জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। হত্যার সঙ্গে এদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।