কমলগঞ্জে আমন ক্ষেতে পোকা এবং ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ, ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ নভেম্বর ২০১৪, ২:৫২ অপরাহ্ণ
একের পর এক বন্যায় জলাবদ্ধতা, মাজরা, পাতা মোড়ানো ও জরা পোকার আক্রমণ, সর্বোপরি ব্লাস্ট রোগের আক্রমণের কারণে আশানুরূপ ফলন না হওয়ার শঙ্কায় চাষীরা। বিদেশি প্রজাতির আকাশমনি, ম্যানজিয়াম, ইউকেলিপটাস গাছের কারণে কৃষিক্ষেতে পোকার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মত।
জয়নাল আবেদীন ::
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় চলতি মওসুমে আমন উৎপাদনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একের পর এক বন্যায় জলাবদ্ধতা, মাজরা, পাতা মোড়ানো ও জরা পোকার আক্রমণ, সর্বোপরি ব্লাস্ট রোগের আক্রমণের কারণে চাষীরা ক্ষতির স্বীকার হচ্ছেন। তবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ চলতি মৌসুমে আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে দাবি করছে। গত দু’দিনে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের ফসলি মাঠ পরিদর্শন করে ও কৃষকদের সাথে আলোচনা করে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মওসুমে ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলিয়ে উপজেলায় মোট ১৬,৯৯০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ হয়েছে। প্রথমে অনাবৃষ্টি থাকলেও পরে অনুকূল আবহাওয়া থাকায় কৃষকরা আমন চাষ করেন। বিআর-১১, বিআর-২২, বিআর-৩২, বিআর-৪৯, স্বর্ণ মুশুরী, আসামীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ধান বীজ দিয়ে তৈরি চারা জমিতে রোপন করেন কৃষকরা। আমনের চারা রোপনের পর পরই বৃষ্টিপাত এবং ঢলের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠ। জলাবদ্ধতা, পোকার আক্রমণ আর রোগাক্রান্ত হয়ে আমন চাষাবাদে বিপর্যয় দেখা দেয়।
রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক মোবাশ্বির আলী, গোবিন্দপুরের ইজ্জাদুর রহমান, আজাদ মিয়া, জুনাব আলী, পতনঊষারের কৃষক ওমর আলী, তোয়াবুর রহমান, আসলম মিয়া, শমশেরনগরের ফজলু মিয়া বলেন, এ বছর আমন চাষাবাদে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বন্যার জলাবদ্ধতায় নিম্নাঞ্চলসহ বেশ কিছু এলাকায় ফসলের ক্ষতি সাধন হয়েছে।
জলাবদ্ধতার পর পরই জরা পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। এছাড়াও মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকায় গোটা উপজেলায় কমবেশি কৃষকদের ক্ষতির স্বীকার হতে হচ্ছে। কৃষকরা আরও বলেন, এসব পোকার আক্রমণ ছাড়াও ব্লাস্ট রোগে ধান গাছের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে লাগানো বিদেশি প্রজাতির আকাশি গাছের সামাজিক বনায়নের কারণেও ধান গাছে পোকার আক্রমণ বেড়েছে বলে তারা মনে করেন।
রাস্তার পাশে রোপিত জমির চার থেকে পাঁচ হাত পরিমাণ ধান গাছ কেটে গরু মহিষকে খাওয়াতে হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপাকে কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দীন আহমদ বলেন, অন্যান্য উপজেলার তুলনায় কমলগঞ্জে আমনের চাষাবাদ খুবই ভাল হয়েছে। প্রতিকূল বিভিন্ন সমস্যায় কারণে কৃষকরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এ বছর আমনের বাম্পার ফলন হবে। পোকার আক্রমণ বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে বিদেশি প্রজাতির আকাশমনি, ম্যানজিয়াম এ সমস্ত গাছের কারণে পোকার পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।