লাউয়াছড়া উদ্যানে টিলা কেটে কটেজ নির্মাণের হিড়িক
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ নভেম্বর ২০১৪, ১২:২৭ অপরাহ্ণ
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি ::
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ সংলগ্ন বনে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের হিড়িক শুরু হয়েছে। মূল্যবান প্রজাতির গাছ গাছালি বিলীন হওয়ায় এ উদ্যানের গহীন অরণ্য প্রতিনিয়ত হচ্ছে বৃক্ষ শূন্য। বনের টিলা কেটে ইকো কটেজ স্থাপনেরও বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ফলে পরিবেশ বিপর্যয়সহ জাতীয় উদ্যানের জীববৈচিত্র্য আজ হুমকির মুখে।
সম্প্রতি ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে লাউয়াছড়া উদ্যান সংলগ্ন এলাকায় টিলা কেটে কটেজ তৈরি করায় ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে।
১৯৯৬ সালে ১২৫০ হেক্টর জায়গা নিয়ে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়। বিশ্বের বিলুপ্ত প্রায় জীববৈচিত্র্যময় বন গবেষণা কেন্দ্র এই উদ্যানে রয়েছে বন্যপ্রাণির অবাধ বিচরণ। এখানে উল্লুক ছাড়া বিভিন্ন দুর্লভ প্রজাতির বন্যপ্রাণী ও পাখির অভয়াশ্রম রয়েছে। বনভূমিটি এক সময়ে বিশালাকৃতির বৃক্ষরাজি সমৃদ্ধ ঘন প্রাকৃতিক বন থাকলেও গাছ চোর চক্রের আগ্রাসী থাবায় প্রকৃতিকে ধ্বংস করা হচ্ছে। এই বনের মূল্যবান প্রজাতির বৃক্ষ নিধনের ফলে পশু-পাখিরা হারিয়ে ফেলছে নিরাপদ জীবন যাপনের পরিবেশ।
এ বনকে লাউয়াছড়া উদ্যান ঘোষণার পর থেকেই দেশি-বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি মহল বনের উঁচু টিলা কেটে কটেজসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেছে। ফলে পরিবেশ ও বন্যপ্রাণি মারাত্মক বিপর্যয়ের সম্মুখীন।
গত ৩ নভেম্বর লাউয়ছড়া বন সংলগ্ন ডলো বাড়ি ও বিষামনিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে নির্মিত ২টি নির্মাণাধীন রিসোর্টের একটিকে নগদ ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা ও অপরটির ভেতরে মাটিকাটার কিছু সামগ্রী পুড়িয়ে ও পানির ট্যাঙ্ক, বিদ্যুতের তার ধ্বংস করে দেয়। কমলগঞ্জ উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত শ্রীমঙ্গল উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সাইদুল হকের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়। লাউয়াছড়া বনের জায়গা দখল করে ও দৃষ্টি নন্দন পাহার কেটে কটেজ তৈরির করার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত সরজমিনে এ অভিযান পরিচালনা করেন। ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিষ্ট্রেট মো. সাইদুল হক জানান, এ অভিযান অব্যাহত থাকবে পর্যায়ক্রমে টিলা কেটে নির্মিত প্রতিটি কটেজ মালিকদের আইনের আওতায় আনা হবে।