কুলাউড়ায় ২০ দিনে ১২ টি ডাকাতি ও চুরি, জনমনে আতংক
প্রকাশিত হয়েছে : ২ নভেম্বর ২০১৪, ১২:১১ অপরাহ্ণ
কুলাউড়া প্রতিনিধি ::
কুলাউড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে একের পর দুর্ধর্ষ ডাকাতি-চুরি হচ্ছে। গত ২০ দিনে ১২ টি ডাকাতি ও চুরি সংঘটিত হয়েছে। পুরো উপজেলার মানুষ চরম আতংকের মধ্যে রাত্রি যাপন করছে। একের পর এক ডাকাতির ফলে প্রবাসী পরিবারগুলো চরম নিরাপত্তাহীনতায় রাত কাটাচ্ছে। গ্রামে গ্রামে স্থানীয় জনগণ রাত জেগে ডাকাত পাহারা দিচ্ছে।
পুলিশের টহল এবং জাগ্রত মানুষের চোখ ফাঁকি দিয়ে গত ২৯ অক্টোবর বুধবার ভাটেরা ইউনিয়নের দক্ষিণভাগ গ্রামের মাধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী মশাহিদ আলীর বাড়িতে রাত আনুমানিক ২টার পরে ১২-১৪ জনের একদল ডাকাত হানা দেয়। বাড়ির দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে বাড়িতে লুটপাট চালায়। ডাকাতদল বাড়ির সবাইকে জিম্মি করে সোনা, নগদ টাকা, মোবাইল ফোনসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। কুলাউড়া পৌর শহরের উত্তর বাজারের আল-মদিনা মার্কেটের কাইয়ূম এন্ড ব্রাদার্সে গত ১৯ অক্টোবর রোববার দিবাগত রাতে সাটারের তালা ভেঙে চোরেরা দোকান থেকে বিয়ের শাড়ি, লুঙ্গিসহ ৭ লক্ষ ৯০ হাজার ৮৫০ টাকা মূল্যের মালামল চুরি করে নিয়ে যায়।
গত ২০ অক্টোবর রাতে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া-কমলগঞ্জের আংশিক) আসনের এমপি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিনের কুলাউড়া শহরস্থ বাসায় জানালার গ্রিল কেটে চোরেরা ভেতরে প্রবেশ করে। বাসার আলমারির দরজা ভেঙে মালামাল নিয়ে গেছে। এদিকে গত ২৪ অক্টোবর শুক্রবার গভীর রাতে একদল দুর্বৃত্ত সাবেক এমপি এম এম শাহীনের আমতৈলস্থ গ্রামের বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় তারা ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে কয়েকটি আলমারি, ওয়ারড্রোব, ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার ভেঙে মূল্যবান কাগজপত্র তছনছ করে। এছাড়া বিভিন্ন ফাইলপত্র, ব্রিফকেস, বিছানা ও আসবাবপত্র লণ্ডভণ্ড করে বাড়ির বাইরে ভেতরে ফেলে যায় এবং নগদ টাকা, টর্চ লাইট ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী নিয়ে যায়। খবর পেয়ে এসআই শামছুল হকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
মাত্র ২০ দিনের ব্যবধানে ১২ টি দুর্ধর্ষ ডাকাতি ও চুরি সংগঠিত হওয়ার পর সর্বত্র আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। উপজেলার সবক’টি ইউনিয়নে মানুষ রাত জেগে পালাক্রমে পাহারা দিচ্ছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক কাদিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান একেএএম সফি আহমদ সলমান জানান, তিনি ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজারে পাহারার ব্যবস্থা করেছেন।
এদিকে গত ১ নভেম্বর রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রাত ১২ টার দিকে মসজিদে মাইকিং করে জানানো হয় এলাকায় ডাকাত এসে প্রবেশ করেছে। এ সময় এলাকার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসে সারা রাত পাহারা দিতে থাকে।
সরজমিন দেখা যায় ভাটেরা, ভুকশিমইল, কাদিপুর ইউনিয়ন ছাড়াও কুলাউড়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে জনগন রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে। রাতে থানা পুলিশের টহল দলও গোটা উপজেলা চষে বেড়ায়। সবকিছু উপেক্ষা করে ডাকাতরা তাদের কাজটা ঠিকই সম্পাদন করছে।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানা অফিসার অমল কুমার ধর জানান, কোথায়ও ঘরে প্রবেশ করে কিছু নিচ্ছে না সব কিছু তছনছ করে যাচ্ছে এগুলো শয়তানি ছাড়া আর কিছু না। তাছাড়া পুলিশ সর্বাত্মক সতর্ক আছে।