সেনাশাসন প্রত্যাখান করল বুরকিনা ফাসোর বিরোধী জোটে
প্রকাশিত হয়েছে : ২ নভেম্বর ২০১৪, ৮:০৭ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোর ক্ষমতা গ্রহণ করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। গতকাল ১ নভেম্বর শনিবার সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল আইজ্যাক জিদাকে রাষ্ট্রপ্রধান ঘোষণার পর দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক জোট, আফ্রিকান ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র, সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের বিরোধীতা করে তা প্রত্যাখান করেছে।
এতে সেনাবাহিনীর ক্ষমতাগ্রহণের বিরুদ্ধে দেশটিতে নতুন করে প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শুক্রবার জনতার সহিংস বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন ২৭ বছর ধরে দেশটির ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট ব্লেইস কমপোরে। সংবিধান সংশোধন করে নিজের মেয়াদ আরো দীর্ঘায়িত করার উদ্যোগে কমপোরে’র বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠে জনতা।
পদত্যাগের পর ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছিলেন কমপোরে। কিন্তু তার জায়গায় রাষ্ট্রের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দেন সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল হোনোরে ত্রাওরে। পরে সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্বে ক্ষমতার আকাঙ্খা ত্যাগ করতে বাধ্য হন সেনাপ্রধান। সেনাবাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের এক বৈঠকের পর প্রেসিডেন্ট গার্ড বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিদাকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
শনিবার ভোরে জাতীর উদ্দেশ্যে দেয়া এক রেডিও ভাষণে নিজেকে বুরকিনা ফাসোর অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা দেন জিদা। তিনি দেশটির সেনাবাহিনীর সবচেয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত ইউনিটের কার্যক্রম প্রধান। তার এ ঘোষণার পর রাজধানী ঔগাদৌগৌর রাস্তায় বিক্ষোভরত ক্ষুব্ধ প্রতিবাদকারীরা বলেছেন, আরেক সেনাকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য তারা কমপোরেকে ক্ষমতা ছড়াতে বাধ্য করেননি।
১৯৮৭ সালে এক সেনাঅভ্যুত্থানের মাধ্যমেই ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন সেনা কর্মকর্তা কমপোরে।
দেশটির বিরোধীদলগুলোর জোট ও সুশিল সমাজের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই ক্ষমতা হস্তান্তরের ধরণ গণতান্ত্রিক ও বেসামরিক হওয়া উচিত।” সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের প্রতিবাদে জোটের পক্ষ থেকে রোববার সকালে প্রেসিডেন্টের বাসভবন অভিমুখে প্রতিবাদ বিক্ষোভের ডাক দেয়া হয়েছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “গণঅভ্যুত্থানের সাফল্যের পর নেতৃত্ব পরিবর্তনের অধিকার জনগণের, এই অধিকার সেনাবাহিনীর কেড়ে নেয়া উচিত নয়।”
ক্ষমতাচ্যুত সেনাশাসক কমপোরে’র সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও সাবেক উপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্সের ঘনিষ্ঠ সামরিক সর্ম্পক থাকলেও গণঅভ্যুত্থানের পর ফের সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের বিরোধীতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের নিন্দা জানিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বেসামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্ববান জানিয়েছে।
আফ্রিকান ইউনিয়নও অপর এক বিবৃতিতে জোরালো ভাষায় বেসামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।