যুক্তরাষ্ট্রই নিজের স্বার্থে বিশ্বকে অস্থিতিশীল করছে — পুতিন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ অক্টোবর ২০১৪, ৮:০৬ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকে অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বিশ্বের ওপর ‘একতরফা হুকুম’ চাপিয়ে দিয়ে বৈশ্বিক নিরাপত্তাকে ওয়াশিংটন ঝুঁকির মুখে ফেলেছে বলে গত শুক্রবার অভিযোগ করেন পুতিন। যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের স্বার্থকে সম্মান না দেখালে বিশ্ব নতুন যুদ্ধের মুখে পড়বে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
রাশিয়ার সোচি শহরে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের এক অনুষ্ঠানে ৪০ মিনিটের আক্রমণাত্মক এক বক্তব্যে পুতিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের ব্যাপক দোষারোপ করেন। মস্কোর সঙ্গে পশ্চিমাদের যে এখনও বিশাল ব্যবধান রয়ে গেছে, উভয় প্রান্তে যে এখনও স্নায়ুযুদ্ধের আবহ অবশিষ্ট রয়ে গেছে_ পুতিনের বক্তব্যে তার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেখা যায়। ইউক্রেন সংকটের জন্য পুতিন পশ্চিমাদেরই দায়ী করেন। ক্রেমলিন ফের সোভিয়েত ইউনিয়ন পুনর্গঠন করতে চাইছে না বলেও দাবি করেন রাশিয়ার এ লৌহমানব; বরং যুক্তরাষ্ট্র তার নিজের স্বার্থে ‘পুরো বিশ্বকে নতুন করে গড়তে চাইছে’ বলে অভিযোগ করেন তিনি। পুতিন বলেন, তিনি ওয়াশিংটনকে হুমকি হিসেবে না দেখলেও মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। পুতিন বলেন, ‘রাশিয়া আবারও তার সাম্রাজ্য গড়তে চাইছে, প্রতিবেশী দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করছে বলে যে বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে তা ভিত্তিহীন।’ লিবিয়া, সিরিয়া, ইরাকসহ বিভিন্ন প্রান্তের সংঘাতের তালিকা তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে এ জন্য দোষারোপ করেন পুতিন। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘ওয়াশিংটনের নীতি কি গণতন্ত্র ও শান্তিকে সুসংহত করেছে? না। তাদের একতরফা হুকুম ও অন্যদের ওপর নিজেদের প্রকল্প চাপিয়ে দেওয়ার কারণে ঠিক উল্টো ফল ঘটছে।’ যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা নিজেদের ‘নীতি উদ্ভূত ফলের বিরুদ্ধেই লড়ছে’ বলেও মন্তব্য করেন পুতিন। তিনি বলেন, রাশিয়া বিশ্বে বিশেষ কোনো অবস্থান দাবি করছে না। ২০১২ সালে ক্রেমলিনে তৃতীয়বারের মতো ফেরার পর থেকেই পশ্চিমাবিরোধী বক্তব্য দিয়ে সরগরম করে রেখেছেন পুতিন। গত মার্চে ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া ক্রিমিয়াকে রাশিয়ান ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত করার পর দেশে তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠে। তার পরও শুক্রবারের এ বক্তব্যকে পুতিনের অন্যতম কড়া পশ্চিমাবিরোধী বক্তব্য হিসেবে ধরা হচ্ছে। ২০০৭ সালেও যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী কড়া বক্তব্য দিয়ে পশ্চিমাদের চমকে দিয়েছিলেন পুতিন। এর পর পশ্চিমারা পুতিন বিষয়ে নতুন করে হিসাব কষতে বাধ্য হয়।
গত ২৪ অক্টোবর শুক্রবারের বক্তব্যে ইউক্রেন ইস্যুতে পশ্চিমা শক্তিগুলোকে দোষারোপ করেন পুতিন। তবে ইউক্রেনের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচকে পালাতে মস্কো সহায়তা দিয়েছিল বলে স্বীকার করেন পুতিন। পশ্চিমাপন্থি বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনের মুখে গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন ছেড়ে মস্কো যান ইয়ানুকোভিচ। ইউক্রেন সংকট নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। মস্কোও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এ প্রসঙ্গে শুক্রবার পুতিন বলেন, মস্কো পশ্চিমাদের কৃপাভিক্ষা করবে না।