সারদা তদন্তে প্রথম চার্জশিট পেশ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ অক্টোবর ২০১৪, ৭:০০ পূর্বাহ্ণ
ভারতের বেআইনী অর্থ সংগ্রহ প্রতিষ্ঠান সারদা গোষ্ঠীর কেলেঙ্কারীর তদন্তে নেমে আজ প্রথম চার্জশিট পেশ করেছে সেদেশের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো বা সি বি আই।
সারদার মালিক সুদীপ্ত সেন তাঁর সহকারী দেবযানী মুখার্জী ও তৃণমূল কংগ্রেসের সাসপেন্ড হওয়া সংসদ সদস্য কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে ওই চার্জশিটে প্রতারণা, ষড়যন্ত্র আর চক্রান্তের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অন্যদিকে ওই কেলেঙ্কারী সামনে আসার পরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী যে তদন্ত কমিশন বসিয়েছিলেন, তার কার্যকাল আজ শেষ হয়ে গেছে কোনও রিপোর্ট জমা দেওয়ার আগেই।
সারদা গোষ্ঠীর চারটি সংস্থা আর সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল সংসদ সদস্য কুনাল ঘোষের সংবাদমাধ্যম কোম্পানি স্ট্র্যাটেজি মিডিয়ার নামে অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সি বি আইয়ের আইনজীবী পার্থ দত্ত।
সারদা গোষ্ঠীর চারটি সংস্থা আর সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল সংসদ সদস্য কুনাল ঘোষের সংবাদমাধ্যম কোম্পানি স্ট্র্যাটেজি মিডিয়ার নামে অভিযোগ আনা হয়েছে।
সারদার মালিক সুদীপ্ত সেন, তাঁর সহকারী দেবযানী মুখার্জী, সংসদ সদস্য কুনাল ঘোষ-রা আগেই গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তবে সি বি আই নতুন করে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের এক কর্তা, এক অতি প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও রাজ্য পুলিশের এক প্রাক্তন মহাপরিচালকে সারদা মামলায় গ্রেপ্তার করেছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা মন্ত্রী, ব্যবসায়ী এবং শিল্পীদের নিয়মিত জেরা করা হচ্ছে – আরও অনেককে জেরা করা বা গ্রেপ্তার করা বাকি আছে বলে জানিয়েছেন সি বি আই অফিসারেরা।
এটিকে আংশিক চার্জশিট বলে বর্ণনা করা হচ্ছে কারণ সি বি আই য়ের পুরো তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। কিন্তু নব্বই দিনের মাথায় চার্জশিট জমা না দিলে অভিযুক্তরা জামিনে মুক্তি পেয়ে যেতে পারেন – এই আশঙ্কাতেই আজ অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
কিন্তু তদন্তকারীরা জানিয়েছেন সারদা মোট কত টাকা বাজার থেকে তুলেছিল, কীভাবে সেই টাকা সরানো হয়েছে – কোন কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি এই বে আইনী ব্যবসায় সাহায্য করেছেন – এই বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। চার্জশিট পেশ হলেও সেই তদন্ত চলবে।
একই সঙ্গে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট আর্থিক নয়ছয়ের তদন্ত চালাচ্ছে আর সারদার সম্পত্তি খুঁজে বার করে বাজেয়াপ্ত করছে।
অন্যদিকে গতবছর সারদার কেলেঙ্কারী সামনে আসার পরে তড়িঘড়ি যে তদন্ত কমিশন তৈরি হয়েছিল, তার মেয়াদ আজই শেষ হয়েছে, কিন্তু সরকার ওই কমিশনের মেয়াদ বৃদ্ধির কোনও ঘোষণা আজ করেনি, অর্থাৎ কমিশনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
প্রায় দেড়বছর কাজ করে ওই কমিশন প্রায় ১৬ লক্ষ আমানতকারীর মধ্যে লাখ কয়েক সবথেকে গরীব আমানতকারীকে টাকা ফেরত দিতে পেরেছে – যেটা সরকারি কোষাগার থেকেই দেওয়া হয়েছে। কোনও তদন্ত রিপোর্টও জমা দেয়নি ওই কমিশন।
বিরোধীদলগুলো অভিযোগ করেছে সারদা কেলেঙ্কারী ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই ওই কমিশন তৈরি হয়েছিল।