কুলাউড়ায় এক চেয়ার নিয়ে দুই সরকারি কর্মকর্তার টানাটানি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ অক্টোবর ২০১৪, ৬:৩৯ পূর্বাহ্ণ
কুলাউড়া প্রতিনিধি ::
কুলাউড়া হাসপাতালে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার পদে দুই কর্মকর্তা চেয়ার টানাটানি করেছেন। ইউএনও অফিসে ২ কর্মকর্তাকে ডাকালেও কোন সুরাহা হয়নি। এই ঘটনায় কুলাউড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০১২ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে যোগদান করেন ডা. আলাউদ্দিন আল আজাদ। অনিয়মের অভিযোগে ডা. আলাউদ্দিন আল আজাদকে গত ২৮ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে স্ট্যান্ড রিলিজ করেন। এ ছাড়া দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শাহজাহান কবীর চৌধুরীকে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের আদেশ দেন। ৭ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে তাদের দায়িত্বভার হস্তান্তর করে পদায়নকৃত কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেন। অন্যথায় ৮দিনের দিন হতে সরাসরি অব্যাহতি পাইয়াছেন বলে গণ্য হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের এই আদেশ জারির পর দোয়ারা বাজার উপজেলা থেকে ডা.মো. শাহজাহান কবীর গত ২ অক্টোবর নিয়মমাফিক কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মস্থলে যোগদান করেন।
এ দিকে স্ট্যান্ডরিলিজকৃত কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আলাউদ্দিন আল আজাদ বদলীকৃত নতুন কর্মস্থল দোয়ারা বাজারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান না করে ঢাকায় চলে যান। গত ১৭ অক্টোবর শুক্রবার রাতে তিনি ঢাকা থেকে কুলাউড়ায় ফেরেন। গত ১৮ অক্টোবর শনিবার সকালে তিনি অফিসে এসে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার চেয়ার দখল করে বসে থাকেন। এদিকে সদ্য যোগদানকারী ডা. মো. শাহজাহান অফিসে এসে ঘটনা দেখে হতবাক হন। এদিকে ঘটনা জেনে কুলাউড়ার ইউএনও মোহাম্মদ নাজমুল হাসান দুই কর্মকর্তাকে তাঁর অফিসে ডাকান। সেখানে ডা. মো. শাহজাহান তার বৈধ বদলীর আদেশ ও যোগদানপত্র দেখালেও বদলীকৃত ডা. আলাউদ্দিন আল আজাদ তাঁর পদোন্নতির এক কাগজ দেখান। ফলে এর কোন সুরাহা হয়নি।
কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শাহজাহান জানান, আমি বিষয়টি আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। তাছাড়া আমি নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় আমার নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেছি। তবে স্ট্যান্ডরিলিজকৃত কুলাউড়ার সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলাউদ্দিন আল আজাদ কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. এটিএম মতিউর রহমান জানান, সরকারি চাকরি করতে হলে নিয়মনীতি মেনে চলতে হয়। কেউ নিয়মের বাইরে গেলে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী জানান, ডা. আলাউদ্দিন আল আজাদ চাকরি বিধি মানছেন না। বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন। পদোন্নতি হলে বদলীকৃত স্থানে গিয়ে ঠিকানা বদলীর আবেদন করতে পারেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।