শেখ মুজিব একজন হত্যাকারী — তারেক রহমান
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ৬:৪৫ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে আবারও বিতর্কিত মন্তব্য করলেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এবার জাতির জনককে মানুষ হত্যাকারী বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
২৯ সেপ্টেম্বর সোমবার স্থানীয় সময় রাত ৯টায় পূর্ব লন্ডনের ইয়র্ক হলে ‘বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বিশ্বনেতা শহীদ জিয়াউর রহমান: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ আখ্যা দেন।
সভায় যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগো শহরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সম্মানে নামকরণকৃত ‘জিয়াউর রহমান ওয়ে’র নামফলক গ্রহণ করেন তারেক। তার হাতে নামফলকটি তুলে দেন ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের সেক্রেটারি অব স্টেটের অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য ছাত্রদলের সাবেক নেতা মোজাম্মেল নান্টু।
যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কায়সর এম আহমেদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী, তারেক রহমানের বিশেষ উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, মাহদি আমিন, বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মহিদুর রহমান, যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিয়া মনিরুল আলম ও সাবেক আহ্বায়ক এম এ মালেক প্রমুখ।
তারেক রহমান বলেন, শেখ মুজিব একজন হত্যাকারী। তার আমলে ব্যাপকভাবে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার ঘোষণা না দিয়ে শেখ মুজিব ভুল করলেও ‘শহীদ’ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সে ভুল করেননি বলেও মন্তব্য করেন তারেক রহমান।
প্রধানমন্ত্রীকে ‘রং হেডেড’ মন্তব্য করে তারেক বলেন, জনগণের প্রতি আস্থা নেই শেখ হাসিনার। দেশের মানুষকে এই রং হেডেড মহিলার কাছ থেকে উদ্ধার করতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চসহ বিভিন্ন সময় সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও স্বাধীনতা ঘোষণা না করে শেখ মুজিব যে ভুল করেছিলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কিন্তু সেই ভুল করেননি। দেশের মানুষের মনের ভাষা বুঝতে পেরে ২৫ মার্চ রাতেই তাই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
নামফলক গ্রহণ বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে শহীদ প্রেসিডেন্টে জিয়াউর রহমানের যে কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা ছিল তার প্রমাণ এই নামফলক। কিন্তু এই নামকরণ যাতে না হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাস এজন্যে ব্যাপক চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হতে পারেনি’।
দীর্ঘ বক্তৃতায় তারেক তার সেই পুরনো কথাই নতুন করে শোনান নেতাকর্মীদের।
বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের নাগরিক আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে দেশে ফিরে এসে শেখ মুজিব অবৈধভাবে প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়েছিলেন।
শেখ মুজিবের আমল বাংলাদেশের অন্ধকার যুগ ছিল মন্তব্য করে জিয়াপুত্র তারেক বলেন, এই অন্ধকার থেকে দেশকে আলোর পথে ফিরিয়ে এনেছিলেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও কড়া সমালোচনা করেন তারেক। তিনি বলেন, চোর-ডাকাত-দুর্নীতিবাজরা শেখ হাসিনার আপনজন।
সম্প্রতি এ কে খন্দকারের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের অবস্থানের কড়া সামলোচনা করে তারেক বলেন, তাদের মতের বাইরে গেলেই, তারা রাজাকার উপাধি দেয়।
আওয়ামী লীগের রাজনীতির একমাত্র পুঁজি পঁচাত্তরের পনেরই আগস্ট বলেও মন্তব্য করেন তারেক।
পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে সেনা বিদ্রোহের কথা স্মরণ করে তারেক বলেন, ওই সময় খালেদ মোশাররফকে কারা হত্যা করেছিলো হাসানুল হক ইনুকে (তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি) রিমান্ডে এনে তা জিজ্ঞেস করা উচিত।
নেতাকর্মীদের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহবান জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে নেই। আওয়ামী লীগ জনগণের ভাষা বোঝে না, একাত্তরেও তারা এটি বোঝেনি।
আন্দোলন এখনও টের পাচ্ছে না বর্তমান ‘অবৈধ’ সরকার। যখন টের পাবে তখন আর পালাবার পথ পাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন বিএনপির এই নীতি-নির্ধারক নেতা।