৪০% কারখানায় ঈদ বোনাস হয়নি
প্রতিশ্রুতি রাখেনি পোশাক শিল্প মালিকরা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ১০:২৮ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
শ্রম মন্ত্রণালয়ে ২১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভায় ২৮ তারিখের মধ্যে শ্রমিকদের ঈদ বোনাস বা উত্সব ভাতা ও ২ অক্টোবরের মধ্যে বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন গার্মেন্ট কারখানার মালিকরা। তবে বোনাসের সে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেননি অনেক মালিকই। গতকাল পর্যন্ত বোনাস পাননি ৪০ শতাংশ কারখানার শ্রমিক।
দেশের তৈরি পোশাক খাতের কারখানাগুলোয় চলতি মাসের ২৫ তারিখ বোনাস দেয়া শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল পর্যন্ত ৪০ শতাংশ কারখানায় শ্রমিকদের বোনাস দেয়া হয়নি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কিছু কিছু কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। আগামী মাসের ২ তারিখের মধ্যে বেতন-বোনাস দেয়া না হলে অসন্তোষ আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন শ্রমিক নেতারা।
সূত্র অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত মোট ২০টি কারখানায় বোনাস নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এসব কারখানার মধ্যে আছে— মিরপুরের আকিক, নাজ, গাজীপুরের জারা, কালিয়াকৈরের এটিএস ও পোস্তগোলার জেমস নিটওয়্যার। এছাড়া অসন্তোষ বিরাজ করছে লিবার্টি, সাকিব ও মিয়ামি গার্মেন্টসেও। গতকাল রাত ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জারা নিট কম্পোজিটের শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট করছিলেন।
এছাড়া সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার হিসাবে শ্রমিক অসন্তোষ রয়েছে আরো ১৪টি কারখানায়। এ ১৪ কারখানার মালিকরা উত্সব ভাতা দেয়ার বিষয়ে অনাগ্রহী বলে বিজিএমইএ সূত্র জানিয়েছে।
তৈরি পোশাক খাতের এক হাজার কারখানার বেতন-বোনাস পরিশোধ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে শিল্প মালিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন বিজিএমইএ। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, আশুলিয়া ও চট্টগ্রামের পোশাক কারখানাগুলোকে মোট ১৫টি অঞ্চলে ভাগ করে নির্দিষ্ট কমিটি দ্বারা এ পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম চলছে। গতকাল পর্যন্ত মোট ৬১২টি অর্থাত্ ৬০ শতাংশ কারখানার বোনাস পরিশোধ হয়েছে। এ হিসাবে ৪০ শতাংশ কারখানায় বোনাস বা উত্সব ভাতা পরিশোধ হয়নি।
বিজিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম এ বিষয়ে বলেন, ‘পোশাক খাতের অনেক কারখানাকেই বেতন-বোনাস নিয়ে সংগ্রাম করতে হচ্ছে। এর মূল কারণ কারখানায় কাজ নেই। রোববার (গতকাল) পর্যন্ত ৬০ শতাংশ কারখানায় বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে। আশা করছি, আগামী মাসের ৩ তারিখের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হবে।’
এদিকে মালিক সংগঠনের দেয়া তথ্যের সঙ্গে একমত নন শ্রমিক প্রতিনিধিরা। তবে উভয় পক্ষ থেকে ভিন্ন পরিসংখ্যান দেয়া হলেও সবার দেয়া তথ্যে এটা পরিষ্কার যে, বোনাস পরিশোধ করেছে এমন কারখানার সংখ্যা ৬০ শতাংশের বেশি নয়। আর প্রকৃত পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পেতে হলে শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
ন্যাশনাল গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, ‘আমাদের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ৩০ শতাংশ কারখানা বোনাস পরিশোধ করেছে। কর্মীসহ আমরা মাঠে আছি। পর্যবেক্ষণের কাজ চলছে, শেষ দিন পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
এদিকে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের জেনারেল সেক্রেটারি রুহুল আমিনের দাবি, ‘এখন পর্যন্ত ২০ শতাংশ কারখানায় বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে।’