বোধনে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু আজ বিকেলে
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ৯:২০ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
আর মাত্র একটি রাত পেরোনোর অপেক্ষা। মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার শুরু হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার প্রধান আনুষ্ঠানিকতা। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গোটা বাঙালি সামিল হবে এ উৎসব উদযাপনে।
আজ সোমবার সায়ংকালে হবে দেবীর বোধন। বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে প্রতিটি মণ্ডপে আরম্ভ হবে পূজা-অর্চনা ও প্রসাদ বিতরণ। এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। দেবী দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও
অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। যদিও ২৩ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দেবী আগমনের ডামাডোল।
বাঙালির দুয়ারে কড়া নাড়ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। প্রতিমায় রঙ তুলির শেষ আঁচড় শেষ করেছেন ভাস্কররা। ঢাকে পড়েছে কাঠি, ঢাকির বোল, কাঁসর ঘণ্টা, শাঁখের ধ্বনিতে মুখর চারদিক। হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ-শিশু-কিশোরদের প্রাণে এখন দুর্গোত্সবের আনন্দ শিহরণ।
কাল মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মহাষষ্ঠী বিহিত পূজা, বুধবার(১ অক্টোবর) মহাসপ্তমী বিহিত পূজা, বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) মহাষ্টমী, কুমারী ও সন্ধিপূজা, শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মহানবমী ও বিজয়া দশমী বিহিত পূজা। তিথি অনুযায়ী এবার একই দিনে নবমী ও দশমী পূজা হলেও ৪ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জন ও বিজয়া শোভাযাত্রার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাপস কুমার পাল জানান, রাজধানীতে ২১৬টিসহ সারাদেশে ২৮ হাজার ৪৫৮টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। এর মধ্যে সুত্রাপুর থানায় সবচেয়ে বেশি ৩৫টি মণ্ডপে স্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে, পূজাকে সামনে রেখে এরই মধ্যে মণ্ডপে মণ্ডপে রঙ বে-রঙের আলোকসজ্জা, প্যান্ডেল তৈরি, দেবী দুর্গার অলঙ্করণ ও সাজসজ্জা কাজ সম্পন্ন হয়েছে। একই সঙ্গে চলছে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনের জন্য কেনাকাটা, ঘর-বাড়ি, দোকানপাট ধোয়া-মোছা ও সাজসজ্জার কাজ। হিন্দুদের ঘরে ঘরে পরম যত্নে তৈরি করা হচ্ছে খই-মুড়ি ও তিলের নাড়ু, নারিকেলি ও হরেক ধরনের মিষ্টান্ন।
পঞ্জিকা মতে, এ বছর মর্ত্যলোকে (পৃথিবীতে) দেবীর আগমন ঘটবে নৌকায় চড়ে। আর দেবীর গমন ঘটবে দোলায় চড়ে। যার ফল মড়ক। এতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ ও মহামারীর প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাবে। তবে সনাতন বিশ্বাস মতে দেবী তার অশেষ কৃপায় সবাইকে রক্ষা করেন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জানায়, তিথি মতে এ বছর ৩ অক্টোবর একই সঙ্গে মহানবমী ও বিজয়া দশমী পড়েছে। অন্যদিকে ৬ অক্টোবর মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। তাই দেশব্যাপী সব পূজা মণ্ডপে ৪ অক্টোবর সন্ধ্যার মধ্যে বিজয়া শোভাযাত্রা ও রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে দেবীর বিসর্জন পর্ব শেষ করতে পূজা আয়োজক কমিটির কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে।
রাজধানীর দুর্গাপূজার আয়োজন ঢাকেশ্বরী মন্দির, রামকৃষ্ণ মন্দির কিংবা পুরান ঢাকার পূজা মণ্ডপগুলোকে ঘিরেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু কয়েকবছর ধরে ধানমন্ডি, গুলশান ও বনানীসহ অন্য এলাকাগুলোতে বিভিন্ন পূজা কমিটিগুলো পূজার মণ্ডপ তৈরিসহ অন্যান্য আয়োজন করে আসছে। দেশব্যাপী এ ধর্মীয় উৎসবকে নির্বিঘ্নে ও সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে তিন স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।