মৌলভীবাজারে অধ্যক্ষকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ৮:১৮ পূর্বাহ্ণ
বেতনের টাকা চাওয়া ও কলেজের বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করার অপরাধে গভর্নিং বডির সভাপতি ও তার ভাইয়ের দ্বারা কলেজ অধ্য শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন। তার মুখে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পাওয়ায় তিনি সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ফেরদৌস আহমেদ ::
বেতনের টাকা চাওয়া ও কলেজের বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করার অপরাধে গভর্নিং বডির সভাপতি ও তার ভাইয়ের দ্বারা কলেজ অধ্য শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন। তার মুখে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পাওয়ায় তিনি সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ বিষয়ে কলেজ অধ্য মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নের আলহাজ্ব মখলিছুর রহমান কলেজে।
২৭ সেপ্টেম্বর শনিবার সন্ধ্যারাতে মৌলভীবাজার প্রেসকাবে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন কলেজের অধ্যক্ষ ননী গোপাল রায়। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে কেঁদে কেঁদে বলেন, এর সুষ্ঠু বিচার চাই। উদাহরণ সৃষ্টিকারী শাস্তি চাই। যাতে করে শিক্ষিত ও শিক্ষাবিদের উপর এই ধরণের কোন আচরণ যেন না হয়।
তিনি বলেন, আমার ৪০ বছরের শিক্ষকতা জীবনে জাতীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে পুরস্কার পেয়েছি। আমি মৌলভীবাজার সরকারি কলেজে ১৪ বিষয়ে অনার্স কোর্স, ৫ বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স ও অনেক বিষয়ে পোস্ট ক্রিয়েশন (পদ) করেছি। তিনি বলেন, দেশজুড়ে আমার হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী রয়েছে। কত বড় বড় পদে তারা আছে। ঘটনার পর থেকে আমি লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছি না। তিনি কেঁদে কেঁদে বলেন, আমার বেঁচে থাকা উচিত নয়, আমার মৃত্যু এখন বাঞ্ছনীয়। আমি উপরওয়ালার কাছে চাচ্ছি তিনি যেনো আমাকে তুলে নিয়ে যান।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আলহাজ্ব মখলিছুর রহমান কলেজটি একটি বেসরকারি কলেজ। কলেজটি এখনও এমপিওভুক্তি হয়নি। কলেজটি এমপিওভুক্ত যাতে হয় সেজন্য তিনি যথেষ্ট চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু কলেজের গভর্নিং সভাপতি এম এ রহিম শহীদ ও আজীবন দাতা সদস্য মুজিবুর রহমান মুজিবের বিভিন্ন অনিয়মের কারণে কলেজটিতে আজ শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
তিনি বলেন, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকে তিনি মখলিছুর রহমান কলেজের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই অধ্যক্ষরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। শুরুতে আমাকে মাসিক বেতন ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও আমাকে মাস শেষে ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হতো। বাকি ২০ হাজার টাকা বছর শেষে দেওয়ার কথা। আমি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় রেখে যথাসম্ভব কলেজের পাঠদানসহ নিয়মনীতি মেনে চলেছি। কিন্তু দুই ভাই মিলে কলেজটিকে অরাজক অবস্থার সৃষ্টি করেছেন। অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষকদের বেতন পরিশোধ করছেন না। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তিন মাসের বাকি বেতন চাইলে ও বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করলে আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে দুই ভাই। শুধু তাই নয়, তারা জোরপূর্বক একটি কাগজে আমার স্বাক্ষর নিয়ে নিয়েছে। পরে আমি জেনেছি যে স্বাক্ষর নেওয়া কাগজটি আমার পদত্যাগপত্র হিসেবে তারা বানিয়ে ফেলেছে।
তিনি এ বিষয়ে দু-একদিনের মধ্যে মামলা দায়ের করবেন এবং এবিষয়ে তিনি স্থানীয় মন্ত্রী, এমপিসহ শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করছেন বলেও জানান।
এ বিষয়ে আলহাজ্ব মখলিছুর রহমান কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি এম এ রহিম শহীদ তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, অধ্যকে মারধর করার ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। অধ্যক্ষই কলেজে অনিয়মিত ছিলেন এবং শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করার জন্য তিনিই দায়ী।