আইএসের বিরুদ্ধে হামলায় প্রতি মাসে খরচ ১০০ কোটি ডলার
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ৫:৫৫ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিদের দমনে ইরাক ও সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার খরচ ২০১১ সালে লিবিয়ায় হামলার খরচকেও ছাড়িয়ে যাবে। হিসাব কষে গত বৃহস্পতিবার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এবারের হামলার জন্য প্রতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের খরচ হবে ১০০ কোটি ডলার।
গত মাসে পেন্টাগন হিসাব করেছিল, ইরাক অভিযানে প্রতিদিন গড়ে খরচ হবে ৭৫ লাখ ডলার। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারাই মনে করেছেন, এই হিসাবটা খুব নগণ্য। এর সঙ্গে সিরিয়ায় বৃহত্তর পরিসরে বিমান হামলার বিষয়টি আমলে নিলে সব মিলিয়ে বছরে যুক্তরাষ্ট্রের এক হাজার কোটি ডলারের বেশি খরচ হতে পারে।
আটলান্টিক কাউন্সিলের জ্যেষ্ঠ ফেলো জিম হাসলিক বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমার মনে হয়, খরচের পরিমাণটা দুই অঙ্কের বিলিয়ন ডলার হবে, এক অঙ্কের নয়।’
আইএস জঙ্গিদের লক্ষ্য করে গত সপ্তাহে হামলার প্রথম রাতে সাগরের জাহাজ থেকে ৪৭ টমাহক ক্রুস ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে অত্যাধুনিক এফ-২২ র্যাপটর ফাইটার জেট মোতায়েন করা হয়। প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে ব্যয় হয় ১৫ লাখ ডলার। এফ-২২ ফাইটার জেট উড্ডয়নে প্রতি ঘণ্টায় খরচ হয় ৬৮ হাজার ডলার।
বলার অপেক্ষা রাখে না, ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের দমনে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার খরচের অঙ্কটা বিশাল। তবে গত দশকে ইরাক ও আফগানিস্তানে হামলার খরচের তুলনায় অঙ্কটা নিতান্তই নগণ্য। আফগানিস্তানে হামলার জন্য প্রতি সপ্তাহে বরাদ্দ ছিল ১০০ কোটি ডলার।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ঘোষণা দিয়েছেন, এবারের হামলায় স্থল সেনা পাঠানো হবে না। তবে ইরাকে মার্কিন কূটনীতিকদের নিরাপত্তা, বিমান হামলার সমন্বয় ও ইরাকি বাহিনীকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য এক হাজার ৬০০ পদাতিক সেনা মোতায়েন রয়েছে। বিশ্লেষক ও সাবেক কমান্ডাররা মনে করছেন, হামলা চলতে থাকলে সেনাসংখ্যা আরও বাড়বে। একই সঙ্গে খরচও বাড়বে।
হোয়াইট হাউস ধারণা দিয়েছে, আইএস জঙ্গিদের দমনে ইরাক ও সিরিয়ায় বিমান হামলা কয়েক মাস চলবে। তবে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড বাজেটারি অ্যাসেসমেন্টের শীর্ষ কর্মকর্তা টড হ্যারিসন বলছেন, ‘এ হামলার ইতি টানতে কত সময় লাগবে তা বলার সময় এখনই আসেনি।
লিবিয়ায় বিমান হামলার সঙ্গে তুলনা: ২০১১ সালে লিবিয়ায় ন্যাটোর সাত মাসের বিমান হামলায় খরচ হয় প্রায় ১০০ কোটি ডলার। হামলা শুরুর কয়েক দিন পরই বিমান হামলা পরিচালনা থেকে সরে আসে যুক্তরাষ্ট্র। এর বদলে ট্যাংকের জ্বালানি সরবরাহ ও বিমান পাহারা দিয়ে ন্যাটোর হামলায় সহায়তা করতে থাকে মার্কিন বাহিনী। লিবিয়ার মতো না করে এবারের হামলায় প্রধান ভূমিকায় থাকতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি আরব জোটেরা আইএসের ওপর বোমা হামলায় অংশ নিলেও মূল ভূমিকায় থাকবে যুক্তরাষ্ট্র।
আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বিল ক্লিনটনের আমলের সাবেক বাজেট কর্মকর্তা গর্ডন অ্যাডামস বলছেন, ‘আমার ধারণা, এ হামলায় বছরে ১৫ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে। আর মাসে খরচ হবে ১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার থেকে ১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার।’