শেরপুরে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ২ জন নিহত
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ৪:১৮ অপরাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
শেরপুর সদর উপজেলার ভাগলগড় পূর্বপাড়া গ্রামে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় দুজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের ভাগলগড় পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন ভাগলগড় পূর্বপাড়া গ্রামের হানিফ উদ্দিনের ছেলে ফারুক হোসেন (৩২) ও একই গ্রামের মৃত মনতাজ আলীর ছেলে আজের উদ্দিন (৩৮)। আহত সোহেল মিয়া (৩০) ফারুকের ছোট ভাই।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. ছানুয়ার হোসেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. ইলিয়াছ উদ্দিনকে হারিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ফারুক হোসেন ছিলেন আওয়ামী লীগের সমর্থক ছানুয়ার হোসেনের নির্বাচনী এজেন্ট। আজের উদ্দিন জাতীয় পার্টি ও ইলিয়াছ উদ্দিনের সমর্থক। আজ সকালে সাড়ে সাতটার দিকে ভাগলগড় গ্রামের স্থানীয় বাজারে যাওয়ার সময় আজের উদ্দিন ফারুক হোসেনের বাবা হানিফ উদ্দিনের পথরোধ করে জানতে চান, কাকে ভোট দিয়েছেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে আজের উদ্দিন হানিফকে মারধর করেন। খবর পেয়ে হানিফ উদ্দিনের দুই ছেলে ফারুক হোসেন ও সোহেল মিয়া ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা দুজন তাঁদের বাবাকে মারধরের কারণ জানতে চাইলে আজের উদ্দিন লুকানো ধারালো ছুরি দিয়ে ফারুক ও সোহেলকে আঘাত করেন। ফারুকের পেটে ও সোহেলের পিঠে ছুরির আঘাত লাগে। ফারুক ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং ছোট ভাই সোহেল গুরুতর আহত হন। সোহেলকে শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর আজের উদ্দিন পালিয়ে যান।
খবর ছড়িয়ে পড়লে নিহত ব্যক্তির স্বজন ও বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ভাগলগড় গ্রামে তল্লাশি চালিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আজের উদ্দিনকে ধরে গণপিটুনি দেন। পিটুনি দিয়ে আহত অবস্থায় আজের উদ্দিনকে ব্রহ্মপুত্র নদসংলগ্ন একটি ধানখেতে ফেলে তাঁরা চলে যান। দুপুরের দিকে সদর থানার পুলিশ আহত আজের উদ্দিনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পর আজের উদ্দিনের বাড়ির সবাই গা-ঢাকা দিয়েছেন। অপরদিকে ফারুক হোসেনের বাড়িতে চলছে আহাজারি আর শোকের মাতম।
চরপক্ষীমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আকবর আলী জানান, দুটি খুনের ঘটনার পর সদর উপজেলার চরাঞ্চলের ভাগলগড় ও এর আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল করিম বিকেলে প্রথম বলেন, দুটি হত্যার ঘটনায় শেরপুর সদর থানায় এখন পর্যন্ত কেউ মামলা করেনি।
নিহত দুই ব্যক্তির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে ওসি জানান।
শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. মেহেদুল করিম বলেন, নির্বাচন-পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চরপক্ষীমারী ইউনিয়নসহ চরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।