জিজ্ঞাসাবাদ চলছে সাত জঙ্গিকে
জেএমবির বিশেষ গ্রুপ ফারুকীকে হত্যা করে
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ
বেসরকারি টিভি চ্যানেল আইয়ের ইসলামী অনুষ্ঠানের জনপ্রিয় উপস্থাপক নুরুল ইসলাম ফারুকীকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামা‘আতুল মুজাহিদীন (জেএমবি) জঙ্গিরা হত্যা করেছে বলে তথ্য পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জঙ্গি সংগঠনটির ইন্টেল (ইন্টেলিজেন্স) ও এক্সিকিউশন গ্রুপ এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে।
পূর্বদিক ডেস্ক ::
বেসরকারি টিভি চ্যানেল আইয়ের ইসলামী অনুষ্ঠানের জনপ্রিয় উপস্থাপক নুরুল ইসলাম ফারুকীকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন (জেএমবি) জঙ্গিরা হত্যা করেছে বলে তথ্য পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জঙ্গি সংগঠনটির ইন্টেল (ইন্টেলিজেন্স) ও এক্সিকিউশন গ্রুপ এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে। জঙ্গিদের এ গ্রুপটির বিশেষত্ব হচ্ছে_ তারা একে অপরকে চেনে না। শুধু টার্গেট করা ব্যক্তিকে খুন করার সময় যার যার দায়িত্ব পালনে একত্র হয়। এর মধ্যে গ্রুপের ইন্টেল অংশটি টার্গেট ব্যক্তির গতিবিধি থেকে শুরু করে সর্বশেষ অবস্থান পর্যন্ত নিশ্চিত করে। এক্সিকিউশন গ্রুপটি কিলিং মিশনে অংশ নেয়। হত্যাকাণ্ডে তারা ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে থাকে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ফারুকীকে হত্যার ধরন দেখে প্রথমেই গোয়েন্দাদের অনুমান হয়েছিল, এটা কোনো জঙ্গি সংগঠনের কাজ। অন্যান্য বিষয় মাথায় রেখে সে অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডের তদন্তও চলছিল। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার জেএমবির ভারপ্রাপ্ত আমির আবদুল্লাহ আল তাসনীমসহ সাত জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ফারুকীকে খুনের বিষয়টিতারা জানত বলে জানায়।গোয়েন্দা কর্মকর্তা মনিরুল বলেন, ফারুকী হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাত জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। তারা দাবি করেছে যারা ইসলামের জন্য ক্ষতিকর, জেএমবির বিশেষ গ্রুপ ওইসব লোককে কতল করে।সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদকারী গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, জেএমবির ভারপ্রাপ্ত আমির গোয়েন্দা হেফাজতে থাকায় নিষিদ্ধ সংগঠনটির ইন্টেল গ্রুপটিকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে গোয়েন্দারা আশাবাদী। ওই গ্রুপটিকে চিহ্নিত করা গেলে শুধু ফারুকীই নন, এর আগে গোপীবাগে সিক্স মার্ডারসহ একই কায়দায় সংঘটিত বেশ কয়েকটি ক্লুবিহীন হত্যাকাণ্ডের মোটিভও উন্মোচিত হবে বলে আশাবাদী গোয়েন্দারা। গত ২৭ আগস্ট রাতে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারের ১৭৪ নম্বর বাসার দোতলায় ফারুকীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করছে। ডিবি পুলিশ ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজন এক নারীসহ তিনজকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য মেলেনি।
মামলাটির তদন্ত-সংশ্লিষ্ট ডিবি পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতার জেএমবির ভারপ্রাপ্ত আমির তাসনীমসহ সাত জঙ্গি ফারুকী হত্যাকাণ্ডে প্রাথমিকভাবে নিজেদের সংগঠনের অপর একটি গ্রুপ জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। সংগঠনটির জড়িত থাকার বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া গেলে ওই সাতজনকে ফারুকী হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ফারুকীর পরিবার ও সংগঠনের অভিযোগসহ তার ব্যবসায়িক ও পারিবারিক বিরোধগুলো আমলে নিয়েও মামলাটির তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেন বলেন, সাত জঙ্গিকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় দুই দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে একই মামলায় আরও দুই দিনের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অপর একটি বিস্ফোরক মামলায়ও তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।