ব্যয় হবে ৯৭৬ কোটি টাকা
ভারতের ঋণে কেনা হচ্ছে রেলের ১২০ কোচ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
পশ্চিমাঞ্চল রেলের জন্য কেনা হবে ১২০টি ব্রডগেজ কোচ। সংকট মোকাবেলা ও যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা বাড়াতে ভারতের ঋণে (এলওসি) কোচগুলো কেনা হবে। এতে ব্যয় হবে ৯৭৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এটিসহ আরো পাঁচটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
একনেক সভায় গতকাল মোট ৪ হাজার ২৯৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়। অনুমোদিত ছয়টি প্রকল্পই নতুন। এসব প্রকল্পে সরকারের তহবিল থেকে সরবরাহ করা হবে ১ হাজার ৯২৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আর প্রকল্প সাহায্য ২ হাজার ৩৬৩ কোটি ৭ লাখ ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৫ কোটি ৩ লাখ টাকা রয়েছে।
১২০টি কোচ কেনায় ভারত ঋণ দেবে ৭১০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আর সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ২৬৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা সরবরাহ করা হবে। ২০১৭ সালের জুনে প্রকল্পটি সম্পন্ন হবে। প্রকল্পটির আওতায় রয়েছে এসি স্লিপার কোচ ১৭টি, এসি চেয়ার কোচ ১৭টি, নন-এসি শোভন কোচ ৬৭টি ও এসি জেনারেটর কাম প্রার্থনা কক্ষ ১৯টি।
এদিকে অর্থায়নের উত্স চূড়ান্ত না হলেও একনেক সভায় অনুমোদন করা হয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উেক্ষপণ প্রকল্পটি। ২ হাজার ৯৬৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে জুলাই ২০১৪ থেকে জুন ২০১৭ পর্যন্ত। এর মধ্যে ১ হাজার ৩১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা সরকারের তহবিল থেকে ও ১ হাজার ৬৫২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে ধরা হয়েছে। বিডার্স ফিন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে প্রকল্প সাহায্যের ব্যবস্থা করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।
সভায় আরো জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানি (স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল) এ কাজের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্যাটেলাইটটির নকশা এরই মধ্যে তৈরি করেছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এ প্রকল্পের আওতায় টেলিকমিউনিকেশন ও ব্রডকাস্টিং সেবা দিতে ৪০টি ট্রান্সপন্ডারবিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নির্মাণ করা হবে। এর পর স্যাটেলাইটটি অরবিটাল স্লটে স্থাপন করা হবে। ভূমি থেকে স্যাটেলাইটটি নিয়ন্ত্রণের জন্য দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি সফল হলে ব্রডকাস্টিং ব্যয়বাবদ বছরে ১১০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে বলেও সভায় জানানো হয়।
এছাড়া ২০৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকায় ‘ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রকল্প শেষ হবে ২০১৯ সালে। এর আওতায় নেত্রকোনা, গোপালগঞ্জ, খুলনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও গাইবান্ধায় পাঁচটি ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি স্থাপন করা হবে।
অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহার রোধ, বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমানো ও অগ্রিম বিদুৎ বিল আদায়ের লক্ষ্যে একনেক সভায় ‘খুলনা শহরের জন্য প্রি-পেমেন্ট মিটারিং (প্রথম পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। প্রকল্প ব্যয়ের ৪২ কোটি ৪৩ লাখ টাকার মধ্যে সরকারের তহবিল থেকে দেয়া হবে ৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থাকবে ৫ কোটি ৩ লাখ টাকা। বিদ্যুৎ বিভাগ জুলাই ২০১৪ থেকে জুন ২০১৬ মেয়াদে এটি বাস্তবায়ন করবে।
বাংলাদেশ, ভারত ও ভুটানের মধ্যে আমদানি-রফতানিযোগ্য পণ্যসামগ্রী গুদামজাত সুবিধাসহ হ্যান্ডলিং সুবিধা উন্নয়নে একনেক সভায় ‘তামাবিল স্থলবন্দর উন্নয়ন’ প্রকল্প অনুমোদন হয়। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ৬৯ কোটি ২৬ লাখ টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত এর মেয়াদকাল ধরা হয়েছে।
একনেক সভায় অনুমোদিত আরেক প্রকল্প হলো ‘নিমগাছি সমাজভিত্তিক মত্স্য চাষ’। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল একনেকে অনুমোদিত ছয়টি প্রকল্প সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।