স্পোর্টস ডেস্ক ::
বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ৪২৭ রানের লিড নিয়েছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ । দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ৪ ইউকেটে ২০৮ রান। শিবনারায়ণ চন্দরপল ৬৩ এবং জার্মেইন ব্ল্যাকউড ৪৩ রানে অপরাজিত রয়েছেন।
তৃতীয় দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যখন দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে তখন তাদের লিড ছিল ২১৯ রানের। শুরুতে সফরকারিদের আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন বোলাররা। চা-বিরতির আগেই তারা তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২ উইকেট। চা-বিরতির সময় ওই ২ উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে স্বাগতিকদের রান ৯০। ক্রেইগ ব্রাফেট ৪৪ ও ড্যারেন ব্রাভো ১ রান নিয়ে ছিলেন উইকেটে। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ তখন ছিল বাংলাদেশের বোলারদের হাতে।
চা বিরতির পর ব্র্যাভোকে ফেরান মাহমুদুল্লাহ । ব্র্যাভো দলের সংগ্রহে যোগ করেন ৭ রান। বাফেট মাত্র এক রান যোগ করে মাহমুদুল্লাহর বলে ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। । আর এরপর শিবনারায়ণ চন্দরপল ও জার্মেইন ব্ল্যাকউড অবিচ্ছিন্ন থেকে দিন শেষ করেন। ১০৮ রানের জুটি গড়েন তাঁরা।
তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতার আগের দিনে ধারবাহিকতা অব্যাহত ছিল। ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতায় টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই প্রথম ইনিংসে ৮৯ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। দিন শেষ করে ৭ উইকেটে ১০৪ রান নিয়ে। সেখান থেকে কাল লাঞ্চের মিনিট বিশেক আগেই অলআউট ১৬১ রানে। ফলোঅন এড়াতে ১৮১ রান দরকার থাকলেও বাংলাদেশকে ফলোঅন না করিয়ে বোশেজো স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজই নেমে যায় দ্বিতীয় ইনিংস ব্যাট করতে। দলের ৭৬ রানে তাইজুল ফিরিয়ে দেন ওপেনার লিওন জনসনকে। ৮১ রানে কার্ক এডওয়ার্ডসও শফিউলের বলে বিদায় নেন গালিতে ক্যাচ দিয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল মাহমুদউল্লাহর। সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজেই কি হলো তাঁর পুনর্জন্ম! ফিফটি করেই দায়িত্ব শেষ করে ফেলা একজন ব্যাটসম্যানের জন্য হয়তো প্রশংসাটা একটু বেশি হয়ে যায়। কিন্তু এটাও তো ঠিক, তৃতীয় দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অপেক্ষা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনিই।
আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ ও শফিউল আশা-জাগানিয়া শুরুই করেছিলেন। কাল এই জুটিতে এসেছে আরও ৩০ রান। গ্যাব্রিয়েল শ্যাননের বলে কট বিহাইন্ড হওয়ার আগে ৮৫ মিনিট উইকেটে থেকে ১০ রান করেছেন শফিউল। তবে ১৩ রান নিয়ে দিন শুরু করা মাহমুদউল্লাহ টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো পেলেন পর পর দুই ইনিংসে ফিফটি। শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের ফুলটসে বাউন্ডারি মেরে আসে অর্ধশত। তার আগে মিড উইকেট দিয়ে বিশাল এক ছক্কাও মেরেছেন শ্যাননকে। ১৬১ মিনিট উইকেটে থেকে ৫৩ রান করেছেন ওই ছক্কা আর দুই চারে। শফিউলের সঙ্গে অষ্টম উইকেটে ৪৫ রানের জুটির পর নবম উইকেটে রবিউলকে সঙ্গে নিয়ে যোগ করেন আরও ২০ রান। তখন তো আর জানার উপায় ছিল না যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফলোঅন করাবে না। ছোট ছোট এই জুটিগুলোও তাই ছিল মহাগুরুত্বপূর্ণ।
প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৬ রানের পর কালকের ফিফটি যেন নতুন জীবন দিতে চাইল দীর্ঘদিন খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া মাহমুদউল্লাহকে। কিন্তু ফিফটি করার পরের ওভারেই সুলেমান বেনকে উইকেটটা ‘উপহার’ দিয়ে এলেন তিনি। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যাট চালিয়ে কট বিহাইন্ড! মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর আর মাত্র ৭ রান যোগ করেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ দল। অবশ্য মাহমুদউল্লাহর আউটের পরই অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল যে বাংলাদেশ ফলোঅনে পড়তে যাচ্ছে। কিন্তু সেটা না করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নতুন পরীক্ষার দিকে ঠেলে দিল মুশফিকুর রহিমের দলকে।