মৌলভীবাজারে শিবির তালামীয সংঘর্ষ, আহত ৫ ।। গরমপানি ঢেলে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে তালামীয নেতার হাত
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ মে ২০১৪, ১:১৪ অপরাহ্ণ
মৌলভীবাজারে পূর্ব শত্রুতার জের ও ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত ২৪ মে শনিবার তালামীযে ইসলামিয়া ও ইসলামি ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এসময় শিবির ক্যাডাররা সদর উপজেলা তালামীযের সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমিনকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে নিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে ও উত্তপ্ত গরম পানি ঢেলে তার ডান হাতে পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় শহরে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। আহত তালামীয নেতা রুহুল আমিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদরাসায় দীর্ঘদিন ধরে ইসলামি ছাত্র শিবির আধিপত্য বিস্তারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এই আধিপত্য বিস্তারে বড় বাঁধা অপর ইসলামী ছাত্র সংগঠন তালামীযে ইসলামিয়া। রোববার শিবির কর্মীরা মাদরাসার কয়েকজন ছাত্রকে জোরপূর্বক শিবিরের সমর্থক কূপন কাটাতে চায়। এতে ওই ছাত্ররা ফরম কাটতে আপত্তি জানালে প্রথমে তাদের সাথে ছাত্র শিবির কর্মীদের বাকবিতন্ডা হয়। এসময় শিবিরের এই কার্যক্রমের বিরোধীতা করলে তালামীযে ইসলামিয়র কর্মীদের সাথে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে শিবির তালামীযের অন্তত ৮/১০জন নেতাকর্মী আহত হয়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে সদর উপজেলা তালামীযের সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল
আমিন বিষয়টি মীমাংশার জন্য মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে আসলে উত্তপ্ত শিবির কর্মীরা তার উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে তাকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে নিয়ে শিবিরের আবাসিক ছাত্র মেছে নিয়ে তাকে এলাপাতাড়ি কূপিয়ে জখম করে এবং
তার ডান হাতে উত্তপ্ত গরম পানি ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আহত মো. রুহুল আমিনকে সিলেটের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় শহরে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১২ সালের ১১ অক্টোবর ছাত্র শিবিরের হামলায় মো. রুহুল আমিন, শেখ কাদের আল হাসান সহ তালামীযের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। মো. রুহুল আমিন সমাজসেবামূলক সংস্থা শাহ জালাল (র.) ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট, লতিফিয়া সমাজসেবা পরিষদ ও কাটারাই সমাজকল্যাণ সংস্থার সাথে প্রতিষ্ঠাকাল থেকে জড়িত আছেন। তার উপর হামলার ঘটনায় এসব সংগঠনের দায়িত্বশীলদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ টাউন কামিল মাদরাসা ক্যাম্পাসসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করেছে।
এ ব্যাপারে শিবিরের জেলা সভাপতি দেলোওয়ার হোসেন জয়নুল সংঘর্ষের সত্যতা স্বীকার করে জানান, শিবির-তালামীযের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষেই আহত হয়েছেন। আমরা বিষয়টি মিমাংসার জন্য তালামীযে ইসলামিয়ার উর্দ্ধতন নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চালাচ্ছি।
মৌলভীবাজার জেলা তালামীযের সভাপতি হাফিয কাওছার আহমদ গণমাধ্যমকে জানান, ’৭১ এর পরাজিত শত্রু জামায়াতে ইসলামির ছাত্র সংগঠন শিবির মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদরাসা ক্যাম্পাসকে কবজা করে মৌলভীবাজারে একক আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। তাদের এই ন্যাক্কারজনক হামলায় তালামীয নেতা রুহুল আমিনসহ তালামীযের ৮ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে মামলায় যাবো।
মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ আব্দুস সালেক সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।